নিজস্ব প্রতিনিধি, হাটহাজারী »
মিরসরাইয়ের ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের নামাজে জানাজা শেষে কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এদিকে প্রিয়জনকে হারিয়ে নিহত স্বজনদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। নিহত স্বজনরা দুর্ঘটনায় দায়ী লাইনম্যানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
শনিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার চিকনদ-ী ইউনিয়নের আমানবাজার এলাকার খন্দকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ জনের এবং বাকি ৬ জনের জানাজা নিজ নিজ এলাকায় শেষ হয়। এরমধ্যে এই মাঠে জানাজা হয় রিদোয়ান, সজীব, মারুফ, হাসান ও নিরুর। এছাড়া নিহত হিসামের জানাজা হয় শিকারপুরের নিজ বাড়িতে। সাগর ও মাহিমের জানাজাও শেষ হয় পারিবারিকভাবে। এর আগের রাতে শুক্রবার সাজ্জাদ, রাকিব ও জিসানের দাফন শেষ হয়।
জানাজায় অংশ নিয়েছেন হাটহাজারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালম, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহিদুল আলম, মডেল থানার ওসি রুহুল আমিন সবুজ ও বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাধারণ মানুষ। এর আগে ওই তরুণদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স মাঠে এসে পৌঁছালে মানুষ তাদের এক মুহূর্ত দেখার চেষ্টা করেন।
এদিকে চিকনদ-ী ইউনিয়নের খন্দকিয়া গ্রামের যুগীর হাট বাজার পেরিয়ে মাইক্রোবাস চালক গোলাম মোস্তফা নিরুর (২৬) বাড়ি। স্বামীর দাফন হয়েছে, কন্যা রুহি আক্তারকে বুকে জড়িয়ে রেখে কান্না থামছে না স্ত্রী রুপা আক্তারের। পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তাদের। পুত্রশোকে কাঁদছেন গোলাম মোস্তফার বাবা মো. ইউসুফ। একই এলাকায় কলেজ শিক্ষার্থী জিয়াউল হকের বাড়িতে বিলাপ করছেন মা শাহনাজ আক্তার। ওই বাড়ির পাশে নিহত ইকবাল হোসেনের নানার বাড়ি। মায়ের সঙ্গে এখানেই কেটেছিল শৈশব-কৈশোরকাল। সে কেএস নজুমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সেখানেও ভিড় করছেন মানুষ।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরের দিকে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া রেলস্টেশনের কাছে খৈয়াছড়া ঝর্না এলাকায় রেললাইন পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ জন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত ৬ জন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।