চুয়েটে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

সুপ্রভাত ডেস্ক »

দেশব্যাপী প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। এতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকালে শ্রেণিকক্ষ গুলো ফাঁকা পড়ে থাকতে দেখা যায়। আসেননি কোনো শিক্ষার্থী। ক্যাম্পাসজুড়ে নেমে এসেছে সুনসান নীরবতা, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছেন তারা। তবে দাবি মেনে না নিলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিতে বাধ্য হবেন।

চুয়েটের পানিসম্পদ কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পাঁচ দফা দাবি আদায়ের জন্য শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছে।

চুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইতমাম বলেন, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের কর্মসূচি চলছে৷ চুয়েটসহ চট্টগ্রামে প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন।

চুয়েটের ছাত্র কল্যাণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মুক্তার হোসাইন এই কর্মসূচি সম্পর্কে বলেন বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমরা সবসময় পাশেই আছি।গতকালকেও শিক্ষার্থীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ আমরা প্রশাসন থেকে জানিয়েছি। আশা করব সরকার শীঘ্রই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে এই উদ্ভূত সমস্যার একটি যৌক্তিক সমাধান করবে।

এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে আড়াই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখার পর চট্টগ্রামে আন্দোলন শেষ করে প্রকৌশলের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ঢাকায় হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমসহ তিন উপদেষ্টাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া, ডিসি মাসুদ আলমের পদত্যাগের দাবি জানায়। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার দায়ে সরকারের গায়েবানা জানাজাও পড়েন শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয়ভাবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত মোতাবেক আন্দোলন চলবে বলেও জানান তারা।

প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি-

১. স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে প্রকৌশল আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপর বর্বরোচিত এবং ন্যাক্কারজনক হামলার জন্য আন্দোলনকারীদের সামনে এসে উপস্থিত হয়ে ক্ষমা চাইতে হবে এবং জবাবদিহি করতে হবে।

২. প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইতোপূর্বে গঠিত কমিটিকে আমরা আমাদের প্রতিনিধিত্বের অনুপযুক্তত মনে করি,উক্ত কমিটিকে আমরা প্রত্যাখ্যান করি। অনতিবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিসহ প্রকৌশল আন্দোলনের স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে কমিটি সংস্কার করে পেশকৃত তিন দফা দাবিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেনে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে এবং এ মর্মে সংশ্লিষ্ট তিন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান এবং সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে আজই এর নিশ্চয়তা দিতে হবে।

৩. হামলায় আহত সব শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকারকে বহন করতে হবে এবং আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। পুলিশ দিয়ে এই যৌক্তিক আন্দোলনে আর কোনো প্রকার হামলা করা যাবে না।

৪. বুয়েটের ইইই বিভাগের (২০১৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থী রোকনের উপর হামলাকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং চাকুরি থেকে বহিষ্কার করতে হবে।

৫. শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে হামলার জন্য ডিসি মাসুদকে বহিষ্কার করতে হবে।