সুপ্রভাত ডেস্ক
চীনের সিনোফার্মের দেড় কোটি ডোজ করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা কিনছে সরকার; যার মধ্যে ২০ লাখ ডোজের প্রথম চালান ইতিমধ্যেই ঢাকায় পৌঁছেছে। ওই কোম্পানির সঙ্গে আরও টিকা ক্রয়ের জন্য আলোচনা করছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে রাশিয়ার স্পুটনিকের সঙ্গে এ মাসেই চুক্তি হবে আশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সিনোফার্মের কাছ থেকে আরও টিকা কেনার জন্য আলাপ চলছে। তবে সিনোভ্যাকের সাথে এই মুহূর্তে কোনও আলোচনা হচ্ছে না।
চীন থেকে টিকা পাওয়া একটি স্বস্তির জায়গা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চীন থেকে আমরা যে টিকা কিনেছি তার প্রথম চালান চলে এসেছে। এটি নিয়মিত আসতে থাকবে এবং এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নাই।
রাশিয়ার স্পুটনিকের সঙ্গে আলোচনার কী অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাশিয়ার স্পুটনিকের সঙ্গে আলোচনা প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি এ মাসের মধ্যেই এটি শেষ হবে। সেখান থেকেও আমরা কিছু টিকা পাবো।
টিকার জন্য যোগাযোগ করে বিভিন্ন দেশ থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স জিএভিআই পরিচালিত কোভ্যাক্স কর্মসূচির সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ চলছে। কোভ্যাক্সের কাছ থেকে সরাসরি উপহার ও কস্ট শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে টিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
সেরামের টিকা
গত বছর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত কোভিশিল্ড টিকার ৩ কোটি ডোজ ক্রয়ের জন্য চুক্তি করা হলেও এরমধ্যে মাত্র ৭০ লাখ টিকা পাওয়া গেছে। টিকা রফতানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে বাকি টিকা কবে নাগাদ পাওয়া যাবে এর কোনও নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারতের অবস্থা ক্রমান্বয়ে উন্নতির দিকে যাচ্ছে এবং তাদের টিকা উৎপাদনের সক্ষমতাও বাড়ছে। সেরাম টিকা রফতানি বন্ধ রেখেছে। কিন্তু ভারতের অবস্থা যতো দ্রুত ভালোর দিকে যাবে, আশা করছি ততো দ্রুতই রফতানির ওপর এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে।
চাহিদা-যোগান
বাংলাদেশে বর্তমানে টিকার চাহিদা ও যোগানের মধ্যে অনেকটা ভারসাম্যপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে মনে করেন মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশের টিকা চাহিদা ও যোগানের যে চিত্র বিবেচনা করে বলা যায় আমরা একটা স্বস্তিকর পর্যায়ে রয়েছি। আগামী দুই-তিন মাস চাহিদা ও যোগানের মধ্যে কোন সমস্যা আমরা দেখছি না এবং এই সময়ের মধ্যে হয়তো আরও কয়েকটি ঘোষণা আমরা দিতে পারবো।
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ যুব সম্প্রদায় এবং এজন্য আমরা কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দেশে টিকা বণ্টনের ক্ষেত্রে এর সক্ষমতা বিবেচনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, যেমন যেসব টিকা নিম্ন তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয় সেগুলো শহরে এবং যেগুলো সহজে সংরক্ষণ করা যায় সেগুলি শহরের বাইরে বেশি কার্যকর।
বর্তমানে দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মর্ডানা ও সিনোফার্মের টিকা রয়েছে এবং স্পুটনিকের টিকাও সামনে আসছে। এই সবগুলো টিকাকেই সরকার সমমানের মনে করে বলেও জানান পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, প্রতিটি সমমানের এবং কেউ যদি পছন্দের তালিকায় কোনও একটি টিকাকে এগিয়ে রাখেন, তাহলে সেটি আমাদের পরিকল্পনাকে কিছুটা ব্যাহত করবে।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন