সুপ্রভাত ডেস্ক
দীর্ঘ ২৪ বছর পূর্বের চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার পলাতক ও চার্জশিটভুক্ত ১ নম্বর আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গুলশানের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। বাসাটিতে নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। অভিযানে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে আশিষকে গ্রেফতার করা হয়।
আশীষ রায় চৌধুরী নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। তিনি জিএমজি, রিজেন্টসহ একাধিক বেসরকারি এয়ারলাইনসের ঊর্ধ্বতন পদে ছিলেন।
আশীষ রায় চৌধুরী ২৪ বছর ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন সবার চোখের সামনে দিয়ে। রিজেন্ট এয়ারওয়েজের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) হিসেবে বিমানবন্দরের ভেতরে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। ছিল বিমানবন্দরে প্রবেশের ডিউটি পাস। এই পাসটি সংগ্রহ করার আগে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) কর্মকর্তারা সশরীরে তদন্ত করেন। তাদের সবার চোখ এড়িয়ে পাস নিয়ে এতদিন মন্ত্রী-এমপিসহ ভিআইপিদের সান্নিধ্যে ছিলেন আশিষ।
গত ২৮ মার্চ তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়। ৩০ মার্চ থেকে ওই বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। গোপন তথ্যে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাসা মিরপুর ডিওএইচএস। ওই বাসাটি তিনি আত্মগোপনের জন্য ব্যবহার করছিলেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আশিষ র্যাবকে জানিয়েছে, গত ২৪ বছরে তিনি অনেকবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। তিনি কানাডার নাগরিকত্বও পেয়েছেন।
আশিষ বলেছেন, এই মামলায় তিনি একবার জামিন পেয়েছিলেন।
১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। সোহেল চৌধুরী নিহত হওয়ার পরপরই এই হত্যাকাণ্ডে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর কথা–কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়।
পরে গোয়েন্দারা তদন্তের পর ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই আজিজ, বান্টি ও আরও ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন।
২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ২ বছর পর মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল–২ এ স্থানান্তর করা হয়।
ওই মামলায় এক আসামির আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০৩ সালে উচ্চ আদালত এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। পরে ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯ বছর পর বিচার কার্যক্রমের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।