সুপ্রভাত ডেস্ক »
শরীরের সুস্থতার জন্য ঘুম দরকার। প্রতিদিনের ক্লান্তি শেষ করে শরীরকে বিশ্রাম দেয়ার জন্য ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ঠিক মনে না ঘুমালে বিভিন্ন রোগে ভুগতে পারেন। তবে অনেকেই আছেন যাদের দুপুরের খাবারের পর বিকেলে ঘুমিয়ে নেন। অনেকেই বিকেলে ঘুমানোর অভ্যাসকে ক্ষতিকর মনে করেন। তবে কেউ ভাবেন বিকেলে ঘুম তাদের আরও চাঙ্গা করে, এমনকি কাজে মনোযোগ বাড়ায়। বাস্তবে বিকেলে ঘুমের প্রভাব কেমন সে বিষয় উঠে এসেছে হেলথ শটের এক প্রতিবেদনে। দিল্লির হাসপাতালের পালমোনোলজি অ্যান্ড স্লিপ মেডিসিনের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. নবনীত বিকেলে ঘুমের বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন।
ঘুমালে শরীরে কেমন প্রভাব ফেলে সে প্রসঙ্গে ডা. নবনীত বলেন, সুস্থ থাকতে রাতে ঠিকভাবে ঘুমাতে হবে। ঘুমের সময় মস্তিষ্ক নিজের দরকারি সব তথ্য ঠিকমতো গুছিয়ে নেয়। অপরদিকে সব অপ্রয়োজনীয় তথ্য ‘রিসাইকেল বিনে’ সরিয়ে রাখে। শরীর এই সময় নিজেকে সারিয়ে তোলার কাজে ব্যস্ত থাকে। এমনকি এই সময়ে দেহে বেশিরভাগ গঠনমূলক কাজ হয়। ঘুমের মাধ্যমেই কেটে যায় ক্লান্তি। পরবর্তী চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি হয় শরীর।তাই সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে চাইলে পর্যাপ্ত সময় ঘুমাতেই হবে।
বিকালে ঘুমের প্রসঙ্গে টেনে নবনীত বলেন, আমরা প্রকৃতিগত-ভাবে রাতে ঘুমাই এবং দিনে জেগে থাকি। এটাই আমাদের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। তবে অনেকেই বিকেলে ঘুমিয়ে নেন। অনেকেই বলেন বিকালে ঘুমিয়ে নিলে তারা ভালো করে কাজ করতে পারে। আবার অনেকে বলেন এটা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ। আমেরিকান একাডেমি অব নিউরোলজির মেডিক্যাল জার্নালের এক গবেষণা থেকে জানা যায় দিনে যারা বেশিসময় ঘুমান তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। যারা ৯০ মিনিটের বেশি সময় বিকেলে ঘুমিয়ে নেন স্ট্রোকের ঝুঁকি ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। সমীক্ষাটি থেকে আরও জানা যায়, দিবে বেশি ঘুমালে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় যেটা পরে বিভিন্ন রোগের কারণ।
বিকেলে ঘুম নাকি ন্যাপ নিবেন: ডা. নবনীত আরও বলেন, তবে এটা মনে রাখতে হবে স্বাভাবিকভাবেই ভোরে ঘুম থেকে জাগলে সারা দিন নানা কাজের ব্যস্ততায় একসময় ক্লান্তি ভর করে শরীরে। এ সময় ঠিকভাবে কাজ করা সম্ভব হয় না। মস্তিষ্ক ক্লান্ত হয়ে পড়লে স্বাভাবিকভাবেই মনোযোগ নষ্ট হয়। যার কারণে কাজের গতি কমে যায়। এমন সমস্যায় বিকেলে ২০ থেকে ৩০ মিনিটের ‘ন্যাপ’ অর্থাৎ ছোট্ট ঘুম দেয়ার কথা বলেন ডা. নবনীত।
দিনে ক্লান্ত হলে স্বল্পমেয়াদি হালকা ঘুম আমাদের জন্য উপকারী। সুযোগ থাকলে দুপুরে কিংবা বিকেলে ছোট্ট ঘুম দেয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। তবে এই ঘুমের জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকতে হবে। একেকদিন একেক সময়ে ন্যাপ নিলে হবে না। তবে সমস্যা হচ্ছে অনেকেই বিকেলে কিংবা দুপুরে দুপুরে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা ঘুমিয়ে নেন। যেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এর প্রভাব পড়ে আমাদের শরীরে। বিকেলে অতিরিক্ত ঘুম কারণে রাতে ঘুমের সমস্যা হয়। পরবর্তী সময়ে অনিদ্রার রোগে ভুগতে হয়।
নিরাময়