পাইকারিতে এক দিনের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ১০০-২৫০ টাকা
ধানের দাম বাড়ায় চালের দাম বেশি, দাবি মিল মালিকদের
সালাহ উদ্দিন সায়েম :
হঠাৎ করে বেড়েছে চালের দাম। এক দিনের ব্যবধানে চালের দাম বস্তাপ্রতি পাইকারিতে বেড়েছে ১০০-২৫০ টাকা। খুচরা পর্যায়ে বেড়েছে ৩০০ টাকা। ধানের দাম বাড়ায় চালের দরে উর্ধ্বগতি বলে মিল মালিকদের দাবি।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের চাক্তাইয়ে ৮টি ও পাহাড়তলীতে ৫টি চালের মিল রয়েছে। চাক্তাই পাইকারি বাজারে বিক্রি হয় কেবল আতপ চাল আর পাহাড়তলীতে বিক্রি হয় মোটা সিদ্ধ চাল। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে বেতি আতপ ও স্বর্ণা সিদ্ধ চালের।
বুধবার পাহাড়তলী পাইকারি বাজারে স্বর্ণা সিদ্ধ চাল বস্তাপ্রতি একলাফে ২৫০ টাকা বেড়েছে। আর চাক্তাই পাইকারি বাজারে বেতি আতপ চালের দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা। মঙ্গলবার স্বর্ণা সিদ্ধ চাল বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) বিক্রি হয়েছিল ২ হাজার টাকা। এক দিনের ব্যবধানে ২৫০ টাকা দাম বেড়েছে। আগের দিন বেতি চালের দাম ছিল ২ হাজার টাকা। এক দিনের ব্যবধানে ১০০ টাকা দাম বেড়েছে।
মঙ্গলবার মিনিকেট আতপ বস্তাপ্রতি ২১৫০ টাকা বিক্রি হলেও বুধবার ২৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। সিদ্ধ মোটা চাল মঙ্গলবার বিক্রি হয়েছিল ১৮০০ টাকা, বুধবার বিক্রি হয় ২ হাজার টাকা। এছাড়া জিরাশাইল ও নাজিরশাইল চাল বস্তাপ্রতি ১৫০ টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে এসব চালের দাম বস্তাপ্রতি ৪০০-৫০০ টাকা বেড়েছে। চালের দাম বৃদ্ধির জন্য সরকারি সিদ্ধান্তকে দুষছেন পাইকারী ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, সরকার ২৬ টাকায় ধান ও ৩৬ টাকা চালের দাম নির্ধারণ করে দেয়ায় বাজারে প্রভাব পড়েছে।
আপদকালীন মজুতের জন্য সরকার প্রতি বছর আমন ও বোরো মৌসুমে কৃষক ও স্থানীয় চালকল মালিকদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে ধান ও চাল সংগ্রহ করেন।
চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম সুপ্রভাতকে বলেন, বেশি দামের আশায় কৃষক ও আড়তদার পর্যায়ে ধান মজুদ হয়ে গেছে। এতে ধানের দাম বাড়ছে, যার প্রভাব পড়েছে চালের দামে।
চালকল মালিকরা বলছেন, সরকার ধান-চালের যে মূল্য নির্ধারণ করেছে তার চেয়ে খোলাবাজারে দাম বেশি। খোলাবাজারে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৪ টাকায়। সেখানে সরকার নির্ধারিত মূল্য ৩৬ টাকা। সরকার ধানের দাম নির্ধারণ করেছে প্রতি মণ ১ হাজার ৪০ টাকা। অন্যদিকে বাজারভেদে ধান বিক্রি হচ্ছে ১০৭০-১১০০ টাকা মণ দরে। যে কারণে কেউই সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
পাহাড়তলী ভাই ভাই অটো রাইস মিলের মালিক জাকির হোসেন জানান, বাজারে ধানের দাম এখন উর্ধ্বমুখী। ঈদের আগে ধান মণপ্রতি ৯২৫ টাকা ছিল, সেটা বেড়ে এখন হয়েছে ১১০০ টাকা। ধানের বাড়তি দামের কারণে চালের দাম বেড়েছে।
পাহাড়তলী চাল ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মো. জাফর আলম বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলে সম্প্রতি বন্যার কারণে অনেক ধান ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। সামনের মৌসুমে সংকট দেখা দেবে, এমন শঙ্কায় মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে ধান মজুদ করে রেখেছে। তারা এখন বাজার থেকে ধান কিনে নিচ্ছে। এ কারণে ধানের দাম বেড়েছে। আর ধানের দাম বাড়ায় চালের দাম বাড়ছে।