নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরের চান্দগাঁওয়ে মা-ছেলে খুনের প্রধান সন্দেহভাজন আসামি ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি ফারুককে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। কিন্তু ঘটনার ১৫ দিন পরেও এ ‘খুনির’ নাগাল পায়নি পুলিশ।
চান্দগাঁও থানার ওসি আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, ‘ফারুক ঘটনার পর থেকে ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিয়েছে। অন্য কোন ফোন ব্যবহার করছে না। তাই তাকে আটকাতে কিছুটা সময় লাগছে। ফারুককে ধরতে র্যাব ও ডিবি পুলিশের একাধিক টিমও মাঠে কাজ করছে। হত্যাকা-ে একাধিক ব্যক্তি অংশ নিতে পারে। ফারুক ধরা পড়লে ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে।’
পুলিশ জানায়, মোবাইল ফোন ব্যবহার না করায় ফারুকের অবস্থান নিশ্চিতকরণে প্রযুক্তিগত সুবিধা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। ফলে জোড়া খুনের রহস্য ঘুরপাক খাচ্ছে সন্দেহের বৃত্তেই। সিএমপির উপকমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, হত্যাকা-ের ধরণ ও আলামত, মামলার এজাহারে উল্লেখ করা অভিযোগ এবং ভিকটিমের ঘনিষ্ঠজনদের দেয়া তথ্যসহ সম্ভাব্য সব কারণ বিবেচনায় রেখে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। ফারুককে গ্রেফতার করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত গুলনাহার বেগমের শরীরে ধারালো অস্ত্রের ১৮টি আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার ৯ বছর বয়সী শিশুসন্তান রিফাতকে জবাই করে খুন করা হয়েছে। ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং ভিকটিমের প্রতি ঘাতকের আক্রোশ ছিল।
গত ২৪ আগস্ট সন্ধ্যায় চান্দগাঁও থানাধীন রমজান আলী সেরেস্তদারের বাড়িতে গুলনাহার বেগম ও তার ছেলে রিফাতকে তাদের ভাড়া বাসায় খুন করা হয়। নিহত গুলনাহার বেগম তার মেয়ে ময়ূরী ও ছেলে রিফাতকে নিয়ে ওই বাসায় থাকতেন। ভিকটিম গুলনাহারের স্বামী আরেকটি বিয়ে করে নোয়াখালীতে বসবাস করেন। হত্যাকা-ের পর রাত আটটার দিকে গুলনাহারের মেয়ে পোশাকশ্রমিক ময়ূরী আক্তার কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরে মা আর ছোট ভাইয়ের রক্তাক্ত লাশ দেখে চিৎকার দিয়ে উঠলে আশেপাশের মানুষ ছুটে এসে পুলিশে খবর দেয়।
ময়ূরী পুলিশকে জানান, ফারুক তাদের বাসায় থাকতেন। ঘটনার পর থেকেই তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মায়ের সাথে পাতানো ভাই-বোনের সম্পর্কের সূত্র ধরে ফারুক তাদের বাসায় আসা-যাওয়া করতেন। মাঝে-মধ্যে বাসায় থেকেও যেতেন। নিজের ওয়েল্ডিংয়ের কাজ না থাকলে সেদিন গুলনাহারের বাসায় তৈরি করা সিঙ্গারা আর চমুচা বাইরে নিয়ে বিক্রি করতেন। তাদের মধ্যে টাকার লেনদেন নিয়ে বিভিন্ন সময় ঝগড়াও হতো।