হুমাইরা তাজরিন »
‘চট্টগ্রাম মুসলিম ইন্সটিটিউট সাংস্কৃতিক বলয় প্রকল্প’-এর আওতায় নির্মিত চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের অবয়ব নিয়ে শিল্পী, সাহিত্যিক, সমাজবিজ্ঞানী, সংষ্কৃতিকর্মী, সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁরা শহিদ মিনারটি পুনরায় নির্মাণের দাবি তুলেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট নির্মাণ কাজ তদারকিতে নিয়োজিতরা এ বিষয়ে এঁদের কারোরই পরামর্শ গ্রহণ করে নি। কারো মতামতকে প্রাধান্য না দিয়েই নিজেদের মতো করে এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘চট্টগ্রাম মুসলিম ইন্সটিটিউট সাংস্কৃতিক বলয় প্রকল্প’টির প্রায় ২৮১ কোটি ৩৯ লাখ ৪৮ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৫ তলাবিশিষ্ট গ্রন্থাগার ভবন, ৮ তলাবিশিষ্ট মিলনায়তন ভবন ও একটি মাল্টিপারপাস হল এবং রাস্তার এপারওপারকে সংযুক্ত করে নির্মাণ করা হয়েছে টানেল আকৃতির প্লাজা, যেখানে রয়েছে ওপেন এয়ার থিয়েটার ও যাদুঘর এবং প্লাজার ওপরে নির্মিত হয়েছে শহিদ মিনার।
জানা গেছে গ্রন্থাগার, মিলনায়তন এবং প্লাজার কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হলেও শহিদ মিনারের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর শহিদ মিনারটি পুষ্পাঞ্জলি প্রদানের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
গত ২০ নভেম্বর বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বহুল প্রতীক্ষিত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারটি প্রস্তুত। সেটি মাটি থেকে ২১ ফুট উঁচুতে প্লাজার ওপরে অধিষ্ঠিত। একই স্থানে পুরোনো শহিদ মিনারটি সমতলের ওপর নির্মিত হয়েছিলো। প্লাজার ওপরে শহিদ মিনার তৈরির নজির দেশে নেই।
এছাড়া শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে উঠতে হবে সিঁড়ি মাড়িয়ে। আবার সিঁড়িও ৪ ভাগে বিভক্ত। এক্ষেত্রে জাতীয় দিবসগুলোতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে আসা মানুষের চাপ কীভাবে এই সিঁড়ি সম্বলিত পথে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে তা ভাবিয়ে তুলছে সবাইকে।
এখানে বয়স্ক ব্যক্তিরা কীভাবে সিঁড়ি বেয়ে শহিদ মিনারে আসবেন তার কোনো উপায় চোখে পড়েনি। তবে কোনোভাবে একবার নিরাপদে প্লাজার ওপরে উঠে গেলে দেখা মিলবে সিঁড়ি বহুল খোলামেলা দোতালা প্রাঙ্গণ।
লাল ইটের প্লাজাটির কালো রঙের বেদিতে সাদা রঙের দন্ডায়মান ৪টি স্তম্ভ দ্বারা সজ্জ্বিত হয়েছে মিনারটি। মিনারটি পুরোনো শহিদ মিনারের আদলে তৈরি হলেও উচ্চতা বাড়েনি। শহিদ মিনারটি প্লাজার ওপরে নির্মিত হলেও এর থেকেও খানিকটা ওপরে মুখোমুখি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে পার্কের মতো পাকা বেঞ্চির। ৫টি করে ৩ সারিতে মোট ১৫টি টাইলস বেষ্টিত বেঞ্চির মাঝে ১টি করে গাছ রোপণ করা হয়েছে। বিশাল জায়গা জুড়ে এই বেঞ্চির পাশাপাশি ১৪ তলা গ্রন্থাগার ভবন, ৮ তলা মিলনায়তনের সামনে শহিদ মিনারের ক্ষীণকায় আকৃতিতে হতাশ হতে হয়। পাকা চতুষ্কোণাকার বেঞ্চিগুলোর দুইপাশে গ্যালারি সদৃশ সিঁড়ি রয়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা এখনো হয়নি। তবে লাইট স্ট্যান্ড স্থাপন করা হয়েছে। শহিদ মিনারের কাছাকাছি এখনও আলোকায়ন করা হয়নি। ন্যূনতম আলোর অভাবে ইতোমধ্যে বিকেল গড়ালে অন্ধকারে সেখানে উঠতি তরুণদের বেপরোয়া আনাগোণা লক্ষ্য করা যায়। দলবেঁধে বিভিন্ন কোণে তাদের সিগারেট ,গাঁজা সেবন করতেও দেখা গেছে।
শহিদ মিনারটি সকলের জন্য দৃশ্যমান হতে হবে
ড. অনুপম সেন, সমাজবিজ্ঞানী
এখন যেখানে শহিদ মিনারটি অবস্থিত আমাদের দীর্ঘদিনের আবদার ছিলো এটিকে কেন্দ্র করে একটি সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স তৈরি করা। যেখানে শহিদ মিনারটি হবে বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে। এটি বাস্তবায়নের জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বিশাল একটি অংক র্নিধারণ করেছে। আসাদুজ্জামান নূর সাহেব এটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন। আমরা আশা করেছিলাম ভালো কিছু হচ্ছে। কিন্তু আমরা সেখানে দেখলাম সেটি এমন জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে তা দেখা-ই যায় না। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয়। আমি তো অল্প কিছু দূর উঠৈ আর উঠতেই পারিনি। ষাটোর্ধ এমনকি পঞ্চাশোর্ধ মানুষেরও সেখানে উঠতে কষ্ট হবে। এমনকি শিশুরাও সেখানে উঠতে কষ্ট হবে। আমাদের যারা আর্কিটেক্ট আছেন তারা খুবই ভালো, কিন্তু এই শহিদ মিনারটি আমার মনে হয়েছে একবারে অবহেলার সৃষ্টি। এরকম কোনো কিছু হওয়ার কথা ছিলো না। আমরা এখানে দায়িত্বরত চিফ ইঞ্জিনিয়ার, প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের কিছু সাজেশন দিয়েছি। আমাদের বক্তব্য হল, শহিদ মিনারটি সকলের জন্য দৃশ্যমান হতে হবে। শহিদ মিনারকে এমন হতে হবে আপনিই যেন সেটি মানুষের শ্রদ্ধা নিতে পারে। সেখানে সিঁড়ি বেয়ে যেন ওঠার প্রয়োজন না পড়ে। এটা নিয়ে আমরা কোনোভাবেই সন্তুষ্ট হতে পারছি না। এই সাজেশন বা আইডিয়াগুলো তারা পর্যালোচনা করবেন। যেটা ভালো হয় সেটাই র্নিধারিত হবে। এগুলো বাস্তবায়নে আমাদের সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ, কালচারাল কমিউনিটি সর্বাত্বক সহায়তা করবে বলে আশা করছি।
আকারে বড় করে পুনরায় শহিদ মিনার নির্মাণ হোক
আবুল মোমেন, কবি ও সাংবাদিক
এখন যেটা তৈরি হয়েছে সেটি দেখা যাচ্ছে না। এখানে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে কষ্ট হয়। দিবসগুলোতে ২ হাজার লোক একত্রে আসলে একত্রে উঠতে গেলে দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছে। শহিদ মিনার এমন একটা স্থাপত্য যেটি আমাদের ইতিহাসকে বহন করে। এটা দূর থেকে দৃশ্যমান হতে হবে।এমন একটা স্থাপনা হতে হবে যেটা প্রেরণাদায়ী । বিশালতার প্রতীক। সেজন্য পাশে যে জায়গাটা আছে আমরা সেখানে আকারে বড়ো করে শহিদ মিনার পুনরায় নির্মাণের জন্য বলেছি। বর্তমানের জায়গাটা প্লাটফর্মের মতো রেখে দেওয়ার পরার্মশ দিয়েছি। পার্কের মতো যে বেঞ্চিগুলো করা হয়েছে সেগুলোর কোনো দরকার ছিলোনা। সেগুলো সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছি। এখন যেটা নির্মাণ করা হয়েছে সেটা নিয়ে আমরা কোনো ভাবেই সন্তুষ্ট হতে পারছিনা।
আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে অবগত হোন
চন্দন দাশ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
এটা যারা পরিকল্পনা করেছেন তারা আসলে এটার যে গুরুত্ব সেটা মাথায় রাখেননি। এটা নিয়ে যে মানুষের আবেগ, সেই আবেগের কথা ভাবেননি। আসল অবয়বটাই দেখা যাচ্ছিলোনা। লক্ষ লক্ষ মানুষ এখানে আসবে ,তারা চাইলেই হুটহাট এখানে আসতে পারবে না। সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স রাস্তার ওপাশে সেটাকে এটার সাথে যুক্ত করে ব্রিজ বানানোর কী দরকার ছিলো? কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে বাস্তবায়ন করা অপরিনামর্দশী একটা পরিকল্পনা ছিলো । এখন এটা যথাযথ মর্যাদায় তৈরি করতে হয়তো আরো এক বছর লাগবে। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে অবগত হোন। কিন্তু এরকম অপরিণামদর্শী পরিকল্পনার সাথে যারা যুক্ত তাদের খুঁজে বের করে তাদের জাবাবদিহি করা হোক এবং ভবিষ্যতে যেন তারা এরকম কোনো কাজে যুক্ত হতে না পারে সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।’
শহিদ মিনারকে আড়াল করা সম্মানযোগ্য বিষয় নয়
প্রদীপ দেওয়ানজী, নাট্যব্যক্তিত্ব
কোনো দিক থেকেই এটা প্রশংসা করার মতো কিছু নয়। শহিদ মিনারকে আড়াল করা , মুসলিম হলকে আড়াল করা সম্মানযোগ্য বিষয় নয়। যদি কখনও কোনো গোলমাল হয় তাহলে সেখান থেকে যদি কেউ পড়ে যায় বা নামতে গিয়ে কোনো দূর্ঘটনা ঘটে তাহলে কী হবে? প্রতিবন্ধীরা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা, সিনিয়র সিটিজেনরা তাদের সকলকে কীভাবে তোলা হবে? এটার নিচে যে রাস্তা সেটা তেমন এসেনশিয়াল ছিলো না , সেটা প্রয়োজনে দিবসগুলোতে বন্ধ রাখা যেতো। এটার ওপরে এতো বড়ো ব্রিজের কি প্রয়োজন ছিলো? কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এটি তৈরি করা হলো? এমনটা কোনোভাবে হতে পারে না।’
কোনো তদারকিতে ছিলাম না আমি
আহমেদ ইকবাল হায়দার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
একুশে পদক প্রাপ্ত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার বলেন, ‘কোনো রকম তদারকিতে ছিলাম না আমি। আমি নিজের তাগিদে সেখানে গিয়ে যেটা ভুল মনে হয়েছে সেটা ধরিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেছি। এখানকার কর্মকর্তাদের আমি নির্মাণ করার সময়ই বলেছি, শহিদ মিনার আকারে ছোট হয়েছে, দেখা যাচ্ছে না। এটা নিয়ে পরবর্তীতে কথা হবে। আমি যাদের সাথে কথা বলেছি তারা হলো সুপারভাইজারসহ অন্যান্য কর্মী। আমি তাদের বললেও তারা ওপরের নির্দেশ মতোই কাজ করেছে। আমি তো ওপরের লোকেদের পাইনি এসব বলার জন্য। তাই আমার কথা কোনোটা শুনেছে, কোনোটা শোনেননি। আমরা মৌখিকভাবে কিছু আইডিয়া ওখানকার কর্মর্কতাদের দিয়েছি। আমরা তো স্থপতি নই । শুধুমাত্র যা যা আমাদের মতে করা যেতে পারে সেটা জানিয়েছি। এরমধ্যে শহিদ মিনার চক্ষুষ্মান করা, পাশে অপ্রয়োজনীয় বিশাল জলাধারের উপযোগিতাপূর্ণ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া, এই স্থানে সম্ভব না হলে মসজিদের পাশে যেখানে জায়গা আছে সেখানে করা। আর্কিটেক্ট তো এখানকার প্রয়োজনীয়তা জানেন না। এটা হলো পাবলিক লাইব্রেরির আওতায় । তাহলে পাবলিক লাইব্রেরি কেন আর্কিটেক্টকে এইসব বিষয় পরিষ্কার করেননি? তদারকি করেননি? এটা দেখে মনে হচ্ছে, দায়সারাভাবে এটা নির্মাণ করা হয়েছে। আমরাই যদি সব বলি তাহলে যাদের দায়িত্বে ছিল এটা তারা কী করেছে?’
আমার কাছে এই কথাটা আসে নাই এই শহিদ মিনারটা ছোট হচ্ছে
আসিফুর রহমান, মূল স্থপতি শহিদ মিনার
যখন শহিদ মিনার ভাঙা হচ্ছে তখন শোরগোল হলো। কেন ভাঙা হচ্ছে এটা সেটা। যাই হোক, এরপর সেমিনার হল হলো। হায়দার ভাই (আহমেদ ইকবাল হায়দার) বললেন, এটাকে নাটক করার উপযোগি করতে হবে। অনেক জায়গায় টয়লেট প্রয়োজন নেই। তারপরও ওনার কথায় সেখানে টয়লেটের ব্যবস্থা হলো। ভিতরে যখন স্ট্রাকচার দাঁড়াচ্ছে তখন সভা অনুষ্ঠিত হলো, যেখানে মূখ্য সচিব মহোদয় , মন্ত্রি মহোদয়, সচিব মহোদয়, মেয়র মহোদয় সকলে উপস্থিত ছিলেন। তারপর কিছুদিন আগে ল্যাম্পপোস্ট বসাবো, এ সময়ে বলা হলো এখানে ল্যাম্পপোস্ট দরকার নেই। লোকজন এখানে ব্যানার নিয়ে দাঁড়াবে। তো ল্যাম্পপোস্ট সরিয়ে ফেলা হলো।এসব কিছুর জন্য বারবার সময় বাড়ানো হলো। আদ্যপান্ত সবকিছু সকলকে জানিয়ে সকলের সামনে করা হলো । কিন্তু শেষ সময়ে এসে একেবারে সর্বহারার মতো আচরণ করছি আমরা। আসাদুজ্জামান নূর স্যার বললেন, অনেকগুলো রিহার্সেল রুম দেবে। সবাই রিহার্সেল করবে। কিন্তু হায়দার ভাই বললেন এখানে ভিআইপি রুম দরকার। আমাদের অতিথিরা আসবেন, থাকবেন। ভিআইপি রুম দেওয়া হলো। কিন্তু আমার কাছে একবারও এই কথাটা এতোদিন যাবত আসে নাই যে, এই শহিদ মিনারটা ছোট হচ্ছে, এটা দেখা যাচ্ছে না। কেউই বলেননি। হায়দার ভাইসহ ,আসাদুজ্জামান স্যারসহ সকলের সাথে আমি ব্যক্তিগতভাবে আলাপ করেছি বাসায়। আমাদের যোগাযোগ ছিলো। নূর (আসাদুজ্জামান নূর) স্যার এটা দেখে আমাকে ফোন করে বলেছেন , এটা খুব সুন্দর হয়েছে, ভালো কাজ করেছি। আগে যে শহিদ মিনারটা ছিলো সেটার সামনে ভাঙারির দোকান ছিলো। খুব করে হলেও ওটার উচ্চতা মিনিমাম ১৫ ফুট।
‘র্যাম্পটা এমনভাবে বানানো হয়েছে যাতে বয়ষ্ক এবং অসুস্থ ব্যক্তিরা সহজে উঠতে পারেন। সবোর্চ্চ লোক সমাগমের কথা মাথায় রেখে ৪ টা বড়ো বড়ো সিঁড়ির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্টেডিয়ামেও তো গ্যালারি আছে সেখানেও আবাহনী মোহামেডানের খেলার সময় প্রচুর মারামারি হয়। কিন্তু কখনও তো ওপর থেকে ফেলে দেওয়া বা পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে না। এতোকিছু বাদ দিতে হলে স্থপতিরা তাহলে করবেটা কী? কিছুই করবে না? কথা ছিলো হুবহু রাখতে হবে শহিদ মিনার আমরা রেখেছি। এটা আমাদের ইথিক্স, উচ্চতাও বাড়ানো হয়নি। মিনারের মধ্যবর্তী দূরত্বও বাড়ানো হয়নি। লাল ইটের প্লাজা প্রচুর তাপ শোষণ করবে । তাই সেখানে ছায়া দেওয়ার জন্য গাছের ব্যবস্থা করেছি। গাছগুলো বেশি বড়ো হলে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে শ্যাওলা পড়ে যাবে। তাই এমন আকারের গাছ বাছাই করা হয়েছে যাতে কম বেশি ছায়াও না হয় ,আলো ছায়া একটা ব্যাপার থাকে। প্রয়োজনীয় তাপ শোষণ করে। গাছ থেকে লেয়ার হয়ে পানি পড়ে। আমার উদ্দেশ্য কেবল ভালো কাজ করবার। এখন একজন এটা নিয়ে কথা বলার পর ১শ’ জন এটা নিয়ে কথা বলছে। দেখা যাবে আরো ১০০ জন আছে যাদের এটা ভালো লাগছে। তারপরও এখন যদি এটা নিয়ে আপত্তি ওঠে তাহলে সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে যা ভালো হয় হোক। আমার তো ব্যক্তিগতভাবে এটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।’
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের আইডিয়া উর্ধ্বতনদের অবগত করেছি
লুৎফুর রহমান, পরিচালক, চট্টগ্রাম মুসলিম ইন্সটিটিউট সাংস্কৃতিক বলয় প্রকল্প
আমাদেরকে কেউই এতোদিন পর্যন্ত এটা নিয়ে কিছু বলেনি। এটা দেখা যাচ্ছেনা বা এটা আকারে ছোট হয়েছে এসব কথা এতোদিন পর্যন্ত কেউই আমাদের বলেনি। এটা একনেকে পাশ হয়েছে ২০১৭ সালে। এটার কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালে।এখন প্রধানমন্ত্রী এটা উদ্বোধন করার পর কেন এই প্রশ্নগুলো আসছে? লিখিতভাবে কোনো কিছু আমরা এখনও না পেলেও চট্টগ্রামের গণ্যমান্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা আমাদের গত ২১ নভেম্বর পরিদর্শন শেষে মৌখিকভাবে কিছু আইডিয়া জানিয়েছেন। আমি সেটা উর্ধ্বতনদের অবগত করেছি।
বিকল্প কী করা যায় ভাবতে হবে
হারুণ-অর-রশীদ, উপ-পরিচালক, চট্টগ্রাম মুসলিম ইন্সটিটিউট সাংস্কৃতিক বলয় প্রকল্প
শহিদ মিনারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে এখনও আলোকায়ন করা হয়নি কারণ ওখানে যে বাতিগুলো বরাদ্দ করা হয়েছে সেগুলো ভীষণ দামি। সেখানে এগুলো দেখাশোনার জন্য লোকবল নিয়োগ করা না হলে এগুলো চুরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এখানে দেখাশোনার জন্য অন্তত ২৫০ লোকবল প্রয়োজন। এছাড়া শহিদ মিনার আকারে ছোট হওয়া, দোতালায় হওয়া, দেখা না যাওয়ার যে বিষয়টা সেটা সম্পর্কে বলতে চাই। আর্কিটেক্ট যখন এটি নকশা করেছেন তখন এটি সম্পর্কে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ,গণ্যমান্য ব্যক্তি, স্টেক হোল্ডার যারা কারোরই সাথে আলোচনা করেননি। প্রয়োজন ছিল সবার সাথে বসে পরার্মশ করে এর নকশা করা। কিন্তু সেটা হয়নি। এছাড়া এর কাজ চলছে পাঁচ বছর যাবত। এতোদিন এটা নিয়ে কেউ কথা বলেনি। সব কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে কেন এটা নিয়ে কথা হচ্ছে। সেখানে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার নিয়মিত খোঁজখবর নিয়েছেন। এটা সেটা করার জন্য বিভিন্ন সময় পরামর্শ দিয়েছেন। তাহলে ওনারা এসব নিয়ে কথা বলেননি কেন? এখন যদি এটা ছোট হয়, দেখা না যায় তাহলে টানেল গেট তো অনেক টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। চাইলেই ভেঙে ফেলা যাবে না। তাই বিকল্প কি করা যায় ভাবতে হবে। এখানে জায়গা পর্যাপ্ত না থাকলে কোথায় করা যায় সেটা নির্ধারণ করতে হবে।