দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সারাদেশে কিছু দুর্বৃত্ত বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। চাঁদাবাজি, মাস্তানি, দখল, মারামারি ইত্যাদির মতো অপকর্মে জড়িত হয়ে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে এখন তারা সরকারি প্রতিষ্ঠানেও হাত বাড়িয়েছে। এবার মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে চাঁদা না দেওয়ায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশ কয়েকটি স্কেভেটর জালিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বাসাবাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়।এসময় বিপুল পরিমাণ যন্ত্রাংশ লুট ও নিরাপত্তাকর্মীদের মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার দিবাগত রাত ৩টায় এই ঘটনা ঘটে।
সেখানে নিয়োজিত সাব কন্টাক্টার সাকিল আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, কয়েকদিন আগে সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চুর বেশ কয়েকজন লোক এসে আমাদের কাজ বন্ধ করতে বলে। এতে আমরা কাজ বন্ধ করিনি। এক পর্যায়ে তারা আমাদের নিকট চাঁদা দাবি করে। আমরা দিতে রাজি না হলে তারা চলে যায়। পরে রাত ৩টার দিকে দলবল নিয়ে এসে পেট্রোল দিয়ে আমাদের স্কেভেটর ও লোড ট্রাক্টরগুলো জ্বালিয়ে দেয়। কর্তৃপক্ষের দাবি ৩ কোটি টাকার অধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদের।
মাতারবাড়ি বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, হামলার বিষয়টি তারা জেনেছেন। করণীয় ঠিক করতে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি টিম মাতারবাড়িতে পাঠানো হচ্ছে। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর দেশের মেগা প্রকল্পগুলোর একটি। গত অক্টোবরে প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে নৌপরিবহন এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ২০২৯ সালের মধ্যে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের দ্বিতীয় পর্বের কাজ শেষ হবে। ২০৩০ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে পণ্যবাহী জাহাজ (মাদার ভেসেল) চলাচল শুরু করবে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর চালু হলে সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন খরচ ২০ ভাগ কম হবে। অর্থনীতিতে যুক্ত হবে ২ থেকে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
যে সমুদ্রবন্দর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট অবদান রাখবে তার নির্মাণকাজ কোনোভাবে বাধাপ্রাপ্ত হোক তা কাম্য হতে পারে না। কাজেই এইসব দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ভবিষ্যতে যেন কেউ করার সাহস না পায় সে ব্যবস্থা গড়ে তুলুন।
এ মুহূর্তের সংবাদ