নিজস্ব প্রতিনিধি, মহালছড়ি »
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের জ্ঞানোদয় বন বিহার এলাকা হতে কালাচান পাড়া পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ৫ গ্রামের প্রায় ২-৩ হাজার মানুষ।
বেশ কয়েক বছর যাবত গ্রামবাসী নিজেদের উদ্যেগে এ রাস্তাটি মেরামত করে আসছেন। কিন্তু এবার তারও কোন উপায় নেই। এবারের বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে রাস্তাটির পাশ ভেঙে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বসন্ত পাড়া, হেমন্ত পাড়া, কালাচাঁন পাড়া, হেম রঞ্জন পাড়া, বিমল পাড়াসহ ৫টি গ্রামের মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। একমাত্র এ রাস্তা দিয়ে কৃষকেরা উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এছাড়া ভাড়ায় চালিত মোটর বাইক চালকরা এ রাস্তায় ভাড়া চালিয়ে পরিবারের ভরণ পোষন করে থাকেন। কিন্তু এখন এ রাস্তার বেহাল অবস্থা হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।
৬ জুলাই শুক্রবার সরেজমিনে গ্রামগুলো ঘুরে দেখা যায়, মহালছড়ি সদর থেকে প্রায় ১০-১২ কিলো দূরে এলাকার ৫টি গ্রাম। কালাচান পাড়ায় একটি মাত্র সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। ৬ কিলোমিটার দূরে কেরেঙানালা গ্রামে একটি নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। স্থানীয়রা জানান, এলাকার শিক্ষার্থীরা ১০-১২ কিলো পথ পায়ে হেঁটে প্রতিদিন স্কুলে যেতে হয় বলে জানান। এদিকে জ্ঞানোদয় বন বিহার এলাকা হতে কালাচাঁন পাড়া পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলো রাস্তা বর্ষার পানিতে ভেঙে গিয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তার বেশির ভাগ অংশ কাঁদা আর সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত।
এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী মোটর বাইক চালক মিলন চাকমা বলেন, এই গ্রামে প্রায় ৫০ জনের মতো এ রাস্তায় ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালিয়ে আমাদের সংসার চলে। কিন্তু এখন রাস্তাটি চলাচল অনুপযোগী হওয়ায় কিভাবে পরিবারের ভরণ পোষণ করবো ভেবে পাচ্ছিনা। জানিনা এ ভোগান্তি কতদিন পোহাতে হবে।
বসন্ত পাড়া গ্রামের কার্বারী (গ্রাম প্রধান) সুশীল জীবন চাকমা জানান, বর্তমানে রাস্তার যে হাল হয়েছে পায়ে হেঁটে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। এ রাস্তার সমস্যা নিয়ে চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে অনেকবার বলেছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। বর্তমানে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে রাস্তার যে বেহাল অবস্থা গ্রামের কোন জরুরী রোগী হাসপাতালে নিতে হলে তা কিভাবো মোকাবেলা করবো ভেবে পাচ্ছি না। এছাড়া কৃষকের উৎপাদিত ফলন বাজারজাত করণ, স্কুল পড়ূয়া ছেলে-মেয়েদের যাতায়াত করা, ব্যবসা-বানিজ্যসহ সকলক্ষেত্রে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামবাসী। রাস্তাটি দ্রুত সংষ্কার করে গ্রামবাসীদের দুর্ভোগ নিরসনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য টান্তু মনি চাকমা রাস্তার বেহাল অবস্থা স্বীকার করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করেছি। অনুমোদন পেলে রাস্তার কাজ করা হবে।
এ ব্যাপারে মহালছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান রতন কুমার শীল বলেন, গত ৩ বছর আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর অর্থায়নে রাস্তাটিতে কিছু অংশ মাটি কাটার কাজ হয়েছিলো। কথা ছিলো রাস্তাটির ইটসলিং এর কাজ করে দেবে। কিন্তু হঠাৎ কি কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেলো তা আমার জানা নেই। বিষয়টি আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে ব্যবস্থা নেব।