চবি সংবাদদাতা »
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির অপর নাম এনালগ ব্যাংকিং। দেশের সব স্কুল-কলেজ ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার অন্তর্ভুক্ত হলেও স্বায়ত্তশাসিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং সেবা এনালগের বেড়াজালে আবদ্ধ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর ভর্তি, ফর্মপূরণ ও অন্যান্য কাজের জন্য রয়েছে অগ্রণী ব্যাংকের একটিমাত্র শাখা। এখানে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে টাকা জমা দিতে বিড়ম্বনার শিকার হয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।
ইতোমধ্যে অধিকাংশ বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। অন্য বিভাগগুলোও পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে। ফলে শুরু হয়েছে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার কাজ।
অগ্রণী ব্যাংকের এই শাখায় সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ সারি, বিদ্যুৎ না থাকায় বিভিন্ন ধরনের বিড়ম্বনা। অনেকেই ব্যাংক রসিদ পূরণ করছেন। প্রতিটি বুথেই রয়েছে শিক্ষার্থীর দীর্ঘ সারি।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, বর্তমানে গ্রাম-মফস্বলেও ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা পৌঁছে গেছে। সেখানে দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এনালগ পদ্ধতি চরম দুর্ভোগের। ব্যাংকিং ব্যবস্থার আধুনিকায়নের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্নিষ্ট কাজ সম্পাদনে অন্যান্য ব্যাংকের শাখা স্থাপনও জরুরি। বিশেষ করে বেসরকারি ব্যাংকগুলো এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. রাকিব বলেন, প্রতিষ্ঠার ৫৭ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় লাগেনি চবির শিক্ষা ব্যবস্থায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য যেখানে আধুনিক প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে উন্নত নাগরিক তৈরি করা, সেখানে সনাতনী পদ্ধতিতে ব্যাংকে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ফি প্রদান করা সত্যিই হতাশার ও ব্যর্থতার। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময় নষ্ট হচ্ছে ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। প্রযুক্তির উৎকর্ষের এই যুগে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আয়শা সিদ্দিকা জেরিন বলেন, একুশ শতকের বিশ্বায়নের এ যুগে এখনো এভাবে এনালগ পদ্ধতিতে ব্যাংকে গিয়ে টাকা জমা দেওয়া সত্যিই দুঃখের। এতে শিক্ষার্থীদের সময় অপচয়ের পাশাপাশি অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিভাগের কোন কাজ ব্যাংকে গিয়ে করার কথা বললেই শিক্ষার্থীদের মাঝে একটা বিরক্তিভাব চলে আসে। ডিজিটাল বাংলাদেশে এটা শিক্ষার্থীদের উপর একরকম জুলুম। আধুনিকতার এ বিশ্বে এনালগ পদ্ধতি পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি।
এ বিষয়ে জানতে চবি আইটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে কাজ চলছে। আমাদের কিছু সিদ্ধান্তের ব্যাপার রয়েছে। এক মাসের মধ্যে চালু হবে বলে আশা করা যায়। তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীরা পেমেন্ট মোবাইলে করতে পারবে। এ বিষয়ে আমরা নগদ বিকাশসহ অনেক কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করেছি। পরে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাবো। প্রশাসনিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে এগুলো এক মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা যায়।
এ বিষয়ে চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।