চবি প্রতিনিধি »
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীকে মারধর ও ভারপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবি ও শারীরিক লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু মুন্সির বিরুদ্ধে।
গতকাল সোমবার সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ও কাটা পাহাড় রাস্তায় এসব ঘটনা ঘটে। দুই ঘটনায় রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এই দুই ঘটনায় রাজু মুন্সি ও অজ্ঞাতনামা দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পদাধিকার বলে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা বাদি হয়ে সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে হাটহাজারী থানায় মামলাটি করেছেন। বাদি নিজে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অভিযুক্ত রাজু মুন্সির দাবি, ‘অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় এ অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলো নিয়ে কোনো সমস্যা নাই। পুলিশে ধরে নিয়ে গেলে উপর মহল থেকে ফোন দিয়ে আমাকে ছাড়াবে।’
প্রধান প্রকৌশলীকে মারধরের বিচার দাবিতে সকাল ১১টার দিকে উপাচার্য দপ্তরে জড়ো হন প্রকৌশল দপ্তরের প্রকৌশলী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এসময় নিরাপত্তা ও ঘটনার বিচার দাবিতে রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগপত্র দেন। তারা ও বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সরবরাহ বন্ধ রাখেন। ৩ ঘণ্টা পর দুপুর ২টার দিকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস চালু করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর ফজল বলেন, কাটা পাহাড় এলাকায় সাইট পরিদর্শনকালে রাজু মুন্সি আমার দিকে ধেয়ে এসে কিল-ঘুষি মারে এবং পরে রেজিস্ট্রার অফিসের সামনেও অসংখ্য লোকের সামনে আমাকে মারতে ধেয়ে আসে। উপস্থিত লোকজন না থাকলে আমার প্রাণনাশের আশঙ্কা ছিল। ক্যাম্পাসে মান-সম্মান নিয়ে চলা দায়। তাদের নানা দাবি-দাওয়া থাকে। রাজু মুন্সি দুই দিন আগেও একটি প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দেন।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাজু মুন্সি আমার অফিসে গিয়ে প্রহরীকে বলে ১০ হাজার টাকা প্রস্তুত রাখতে। এর আধা ঘণ্টা পরে এসে আমাকে অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে বলে ও উত্তেজিত হয়ে মারার হুমকি দেয়। বিষয়টা আমি প্রক্টরকে জানাই। তারপর প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসলে রাজু মুন্সি আমাকে ধাক্কা দেয়। পরে একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রার এসে রাজু মুন্সিকে আটকায়।
শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু মুন্সি বলেন, তারা (প্রধান প্রকৌশলী ও প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা) ঘুষ গ্রহণ ও নিয়োগ সংক্রান্ত নানা অনিয়মে জড়িত। আমার সামনেই প্রধান প্রকৌশলী ঘুষের টাকা নিয়েছেন। নিয়োগ সংক্রান্ত নানা অভিযোগ আছে নিরাপত্তা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এছাড়া টেন্ডারও তার নিয়ন্ত্রণে। আমি এসব নিয়ে প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। কারণ আমার প্রতিবাদের ভাষা একটু বাজে।
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, তারা মামলার এজাহার লিখছেন। এজাহার লেখা শেষে আমার কাছে আসলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।