নিজস্ব প্রতিবেদক
শেষ হলো চট্টগ্রাম-১০ আসনের নির্বাচনী প্রচারণা। কাল (৩০ জুলাই) ১০ আসনের উপ-নির্বাচন। এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ মোট পাঁচ দল ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৮, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ২৪, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে চট্টগ্রাম-১০আসন। শুক্রবার রাত ১২টায় চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপ-নির্বাচনের নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। কাল রোববার (৩০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১৫৬ কেন্দ্রের ১২৫১টি বুথে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। এজন্য ৪ হাজার ১০৬ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা এবং ২ হাজার ১১০টি ইভিএম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
২ জুন ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হওয়ায় তফশীল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘শনিবার (২৯ জুলাই) থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের জন্য ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সাথে দায়িত্ব পালন করবেন তারা। নিরাপত্তার জন্য ভোটকেন্দ্রগুলোতে বসানো হয়েছে ১ হাজার ৪০৭ ক্লোজ সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরা। ৩০ জুলাই উপ-নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা দিয়ে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকায় ২৯ জুলাই মধ্যরাত ১২টা থেকে ৩০ জুলাই মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্রাক, বাস, মিনিবাস, জিপ, পিকআপ, কার ও ইজিবাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মোটরসাইকেল চলাচলে ২৮ জুন মধ্যরাত ১২ থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।’
এই উপ-নির্বাচনে ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯২৯ জন পুরুষ এবং ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৮০ জন নারী ভোটারসহ ভোট প্রয়োগ করবেন ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৬৩৩ জন ভোটার। এবারের উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. সামসুল আলম (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রশীদ মিয়া (ছড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরমান আলী (বেলুন) ও মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া (রকেট)।
কাগজে-কলমে এ ছয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও নির্বাচনী মাঠ সরগরম করেছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. সামসুল আলমও সক্রিয় ছিলেন প্রচারণায়।
প্রচারণায় সরগরম থাকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নৌকা প্রতীকের প্রাথী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, ‘আমরা যেহেতু রাজনীতি করি, সেহেতু আমরা সবসময় আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত থাকি। চট্টগ্রাম-১০ আসনে আমি অত্যন্ত পরিচিত মুখ। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। অনেক ভোটার ও স্থানীয় মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত উৎসাহ নিয়ে আমার প্রচারে অংশ নিয়েছে। ভোটারদের নির্ভয়ে কেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছি।’
নির্বাচনে ভোট কেমন কাস্ট হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জনগণ নৌকাকে চায়। তারা জানে নৌকার বিপরীতে অন্য কোথাও ভোট তেমন একটা পড়বে না। অনেকে কেন্দ্রের আশেপাশে ঘুরে, কিন্তু ভোট দিতে যায় না। আমরা তাদের কেন্দ্রে যাওয়ার জড়তা কাটাতে কাজ করেছি। ভোটারদের কাছ থেকে ভালো সাড়াও পেয়েছি। আশা করছি, এই উপ-নির্বাচনে ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন।’
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. শামসুল আলম বলেন, ‘ভোটারদের কেন্দ্রে আনা নিয়ে আমরা দুঃশ্চিন্তায় আছি। জনগণ পরিবর্তন চায়। এ পরিবর্তনের জন্য তারা আমাদের নির্বাচিত করতে চায়। বিভিন্ন জায়গায় ভোট চাইতে গিয়ে জনগণের সঙ্গে কথা বলে আমি বিষয়টি জেনেছি। কিন্তু ভোটারদের কেন্দ্রে আনার জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে কাজ করতে হবে। তারা উদ্যোগ নিয়ে কাজ না করলে ভোটাররা কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ পাবে না।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘কেন্দ্রে ভোটারদের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ও নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারার মতো সব রকমের ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা বিষয়ে আমরা খুবই সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। সুতরাং ভোটকেন্দ্রে কোনো অন্যায় আচরণ করতে দেওয়া হবে না।’