বাংলাদেশে নিযুক্ত ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ফাম ভিয়েত চিয়েন বলেন, ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম একটি সম্ভাবনাময় স্থান। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। সামনের দিনগুলোতে এটা বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উভয় দেশের মধ্যে ২০২১ সালে ২ বিলিয়ন ডলারের যে বাণিজ্য আশা করেছিলেন কোভিড অতিমারির কারণে তা পূরণ না হলেও সামনের দিনগুলোতে তা অর্জিত হবে বলে রাষ্ট্রদূত আশা করেন।
গতকাল বিকেলে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চট্টগ্রাম চেম্বারের বিজনেস নেটওয়ার্কিং সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি ভিয়েতনামের ৩২ সদস্যের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম। বক্তব্য রাখেন ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ডু কিয়ক হাং, বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এস এম রহমান, চেম্বারের প্রাক্তন সিনিয়র সহসভাপতি ওমর হাজ্জাজ, পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, প্রাক্তন পরিচালকদ্বয় এস এম আবু তৈয়ব ও মাহফুজুল হক শাহ এবং অতিরিক্ত কাস্টম কমিশনার ড. আবু নূর রাশেদ আহমেদ।
এ সময় চট্টগ্রাম চেম্বার এবং ভিয়েতনামের ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন অ্যালায়েন্সের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ভিয়েতনামের সাথে বাংলাদেশের ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। দু’দেশের ব্যবসায়ীরা চাইলে বিনিয়োগের মাধ্যমেই এই ঘাটতি দূর করতে পারে। চট্টগ্রামের ভৌগোলিক ও বাণিজ্যিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীদের তিনি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এছাড়া চট্টগ্রাম চেম্বার আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২৩ এ অংশগ্রহণের জন্য ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানান।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের সাথে ভিয়েতনামের সরাসরি কোন বিমান যোগাযোগ নেই। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকা-হ্যানয় সরাসরি বিমান যোগাযোগ শুরু হবে। যার ফলে গতি আসবে দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও সম্পর্কে।
ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল ডু কিয়ক হাং বলেন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের উদ্যোক্তাদের মধ্যে এখনও তথ্য ঘাটতি রয়েছে। এ অবস্থার উন্নয়নে তিনি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রতিনিধিদল পাঠানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালসসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে উভয়দেশের ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করতে পারে। আগামী বছর বাংলাদেশের সাথে ভিয়েতনামের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হবে। এই সম্পর্ক সামনে রেখে আগামী বছর বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলকে ভিয়েতনামে আমন্ত্রণ জানান তিনি।
বিভিসিসিআই’র সভাপতি এস এম রহমান বলেন- বাংলাদেশ থেকে সীফুড, লেদার ও ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে ভিয়েতনামে। এছাড়া কৃষি ক্ষেত্রে ভিয়েতনাম থেকে বাংলাদেশ কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চেম্বার পরিচালকবৃন্দ মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর) ও মো. ইফতেখার ফয়সাল, দক্ষিণ আফ্রিকার অনারারি কনসাল মো. সোলায়মান আলম শেঠ, চেম্বারের প্রাক্তন পরিচালক কামাল মোস্তফা চৌধুরী ও ক্লিফটন গ্রুপের পরিচালক মো. এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, প্রান্তিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. গোলাম সারওয়ার, অ্যাটাচে ও রাষ্ট্রদূতের পিএস নগুয়েন ভিয়েত আনহ প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি