সুপ্রভাত ডেস্ক »
বছরের শেষ সময়ে বিলাসবহুল পণ্যের এলসি খোলার জটিলতা কাটতে শুরু করায় আমদানি যেমন বেড়েছে, তেমনি গতি ফিরেছে রফতানিতেও। চট্টগ্রাম বন্দরে চলতি বছর কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩২ লাখ ২৩ হাজারটি। আর কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণ প্রায় ১২ কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন।
বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের এ পরিমাণ ভেঙেছে আগের সব রেকর্ড।
রেমিট্যান্সে গতি ফেরায় চাঙ্গা হতে শুরু করেছে দেশের রিজার্ভও। চলতি ডিসেম্বরে এটি ছাড়িয়েছে ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ সময় পণ্য ওঠানামায় রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরও। গত ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে পরিমাণ হ্যান্ডলিং হয়েছে, তা গত বছরের তুলনায় ১ লাখ ৭২ হাজার কনটেইনার বেশি। আর বাড়তি কার্গো পণ্যের পরিমাণ ১৮ লাখ মেট্রিক টন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, কার্গো ও কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে নিজের সক্ষমতা ও সবার সহযোগিতায় এগিয়ে যাচ্ছে বন্দরটি।
তবে বন্দরটির অবস্থা বছরের শুরুতে এতটা রমরমা অবস্থায় ছিল না। ডলার সংকট আর রাজনৈতিক অস্থিরতায় হারাতে বসেছিল বিশ্ব র্যাংকিংয়ের অবস্থান।
বর্তমানে এলসি খোলার ক্ষেত্রে ডলারের জোগান বাড়ায় আমদানি ও রফতানি দুটিই বেড়েছে বলে জানান শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আরিফ। তিনি বলেন, এলসি খুলতে পারায় ও কাঁচামাল আমদানি বাড়ায় বেড়েছে উৎপাদন। এতে রফতানির পরিমাণও বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।
এদিকে, রমজানকেন্দ্রিক পণ্য আমদানির ইতিবাচক প্রভাবও পড়তে শুরু করেছে বন্দরের কাজে। এ সুযোগে কাস্টম হাউজের রাজস্ব আদায় হয়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ড অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট খায়রুল আলম সুজন বলেন, ডলারসংকট কাটতে শুরু করায় গতি ফিরেছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে।
উল্লেখ্য, আগে কম পণ্য নিয়ে বেশি জাহাজ এলেও সে প্রবণতা কমে গেছে। গত বছর বন্দরে আসা ৪ হাজার ১০৩টি জাহাজের বিপরীতে এ বছর এসেছে ৩ হাজার ৮২২টি।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিগত ২০২২ ও ২৩ সালে ডলার সংকটের পাশাপাশি রিজার্ভ ঘাটতির কারণে অন্তত ৮২ ধরনের বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছিল তৎকালীন সরকার। তবে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর হু হু করে বাড়ছে দেশের প্রবাসী আয়। এতে কাটতে শুরু করেছে ডলার সংকট। স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। আর তাই চট্টগ্রাম বন্দর কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে সর্বকালের রেকর্ড ভাঙতে পেরেছে।