নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজকে স্বৈরশাসন মুক্ত, ভোটবিহীন কমিটি ও পরিবারতন্ত্র ভেঙে নতুন নেতৃত্ব আনার দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সমাজের একটি অংশ।
রোববার (১৮ আগস্ট) সকালে নগরীর আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সামনে ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সাধারণ ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি চেম্বারের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এতে যোগ দেয়।
এ সময় বক্তারা, ৬ দফা সংস্কার দাবি তুলে ধরে বলেন, ২০১৪ সালের পর কোনো নির্বাচন হয়নি চেম্বারে। স্বৈরশাসনের মত পরিবারতন্ত্র ও ভোটবিহীন কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন নির্বাচন দিতে হবে। যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করার জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। গত ১০ বছরে চেম্বারের দুর্নীতির বিচারের দাবিও জানান তারা।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি এসএম নুরুল হক, চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুর রহমান, চেম্বারের সাবেক পরিচালক সৈয়দ সগীর আহমেদ, বিজিএমইএর সহসভাপতি রাকিবুল আলম, চেম্বারের সাবেক পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, বারভিডার সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালামত আলী, বাংলাদেশ নন-প্যাকার ফ্রোজেন ফুড্স এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি মো. মাহাবুব রানা, চেম্বার সদস্য এম এ রাজ্জাক, চট্টগ্রাম ফ্রেশ ফুট ভেজিটেবল অ্যান্ড এলাইট প্রোডাক্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলমসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা ও সদস্যবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম চেম্বার কোনো পারিবারিক প্রতিষ্ঠান নয়। কিন্তু বিগত কমিটিগুলো এটিকে পারিবারিক সংগঠন বানিয়ে ফেলেছে। ব্যবসায়ী সংগঠনে ব্যবসায়ীদের সুযোগ না দিয়ে ছেলে-মেয়ে-জামাতাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আসল ব্যবসায়ীরা সুযোগ পাননি।
বারভিডার সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী চিটাগাং চেম্বার অব কমার্সকে ১৭ বছর ধরে স্বৈরশাসনের আজ্ঞাবহ করে রাখা হয়েছে। স্বৈরশাসন ও পরিবারতন্ত্র দিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। আমরা চাই, ব্যবসাবান্ধব চিটাগাং চেম্বারের ভূমিকা নিশ্চিত করতে নতুন কমিটি গঠনের করা হোক।’
বিজিএমইএর সহসভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘চেম্বারকে সংস্কার করতে হবে। বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে পদত্যাগ করতে হবে। পরিবারতন্ত্রের কবলে পড়ে চিটাগাং চেম্বার ব্যবসায়ীদের কথা বলতে পারেনি।’
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, পরিবারতন্ত্রের কারণে তাঁদের চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত ট্যাগ দিয়ে অনেককে বিনা কারণে চেম্বার থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। অবিলম্বে তাঁদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে।
চেম্বারকে সংস্কারের দাবি জানিয়ে বক্তারা আরো বলেন, বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে পদত্যাগ করতে হবে এবং মেম্বারশিপ সহজীকরণ করতে হবে। পরিবারতন্ত্রের কবলে পড়ে চট্টগ্রাম চেম্বার দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারেনি।
চট্টগ্রাম চেম্বারে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছে গত বছরের আগস্টের শুরুতে। তবে তাতে ভোট হয়নি। প্রথমে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পরিচালকেরা নির্বাচিত হয়েছেন, এরপর তাঁরা সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। এটি নিয়ে টানা পাঁচবার ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এ কারণে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল।