নিজস্ব প্রতিবেদক »
বছরের শেষ সময়ে এসে চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফের করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে। ওমিক্রনের নতুন ধরন ‘বিএফ.৭’ চারগুণ বেশি সংক্রামক। ধরনটি নিয়ে চট্টগ্রামেও আজ নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী।
তিনি বলেন, নতুন ধরন ‘বিএফ.৭’ কম সময়ের মধ্যে বেশি মানুষকে আক্রান্ত করে। এ ব্যাপারে আমরা আজ স্বাস্থ্য নির্দেশনা প্রদান করবো। আগের মতো করোনা প্রতিরোধের যে নিয়ম-কানুন আছে জেলা উপজেলা কমিটিতে যাতে এসব নিয়ম পালন করা হয় তার নিদের্শনা প্রদান করবো।
তবে চট্টগ্রামে করোনার চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যাপ্ত রয়েছে দাবি করেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান। তিনি বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসা সরঞ্জাম রেডি করে রাখা হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তুত। কারণ দু বছর সামাল দিয়েছি। এই অভিজ্ঞতাগুলো কাজে আসবে। আশা করি বিপাকে পড়তে হবে না।’
চিকিৎসা সেবায় নতুন কোনো পরিকল্পনা করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেভাবে আমাদের পরিকল্পনা এখনো করা হয়নি। যেহেতু নতুন ধরনটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তাই আমরা আমদের জায়গা থেকে সচেতন রয়েছি’।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে আমাদের হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে। আমাদের আইসিইউ বেড ১৮টি রেডি আছে। এখন আইসিইউর ১০টা বেডে আনকোভিড চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে ১৮টিতে কোভিডের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে।
করোনা নিয়ে আমাদের দেশে এখনো সেভাবে উদ্বেগ প্রকাশের মতো কিছু হয়নি, যতটা চীন, ভারতসহ অন্যদেশে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা আমদের জায়গা থেকে প্রস্তুত রয়েছি। তবে মন্ত্রণালয় থেকে এখনো সেভাবে নির্দেশনা হাতে পায়নি।’
সংক্রমণের নতুন ঢেউ মোকাবিলায় সরকারের কোভিড বিষয়ক জাতীয় কারিগরি কমিটি ৪ দফা সুপারিশ করেছে। রোববার (২৫ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত ‘বিশ্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সভায় এসব তথ্য জানান অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির।
তিনি বলেন, চীন-ভারতসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে আবারও সংক্রমণ বাড়ছে। এই অবস্থায় করণীয় ঠিক করতে শনিবার জাতীয় কারিগরি কমিটির বৈঠক ছিল। কমিটি চারটি বিষয়ে আমাদের পরামর্শ দিয়েছে।
আহমেদুল কবির বলেন, করোনা সংক্রমণের নতুন ভ্যারিয়েন্টের সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য এটির ঝুঁকি চারগুণ বেশি। একজন আক্রান্ত ব্যক্তি ১৮ জনকে সংক্রমিত করতে পারে। তাই যারা টিকা নেননি তাদের দ্রুত টিকা নেওয়ার জন্য কারিগরি কমিটি সুপারিশ করেছে। এছাড়া সেকেন্ড বুস্টার ডোজের (চতুর্থ ডোজ) প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধির বিষয়েও বলেছে। যারা ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার, গর্ভবতী নারী ও ষাটোর্ধ আছেন, তাদের দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ দ্রত নিতে বলা হয়েছে। ‘দ্বিতীয় সুপারিশ-যারা কোমরবিটিডি তথা দীর্ঘ মেয়াদে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত তাদের অবশ্যই প্রটেকটিভ কেয়ার নিতে হবে। যেমন-মাস্ক পরা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার, নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান এসব মানতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে।