চট্টগ্রামে সয়াবিনের খুচরা মূল্য ১৬০ টাকা নির্ধারণ

মতবিনিময় সভায় সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক »
নগরীর বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট নিরসনে ভোজ্যতেলের নতুন দর নির্ধারণ করেছে জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে খুচরা পর্যায়ে লিটারপ্রতি সর্বোচ্চ ১৬০ টাকায় সয়াবিন তেল বিক্রি করা যাবে, যা আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা একটার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেল এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে দাম নির্ধারণ করে দেন।
এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। এসময় ব্যবসায়ী গ্রুপ টিকে ও সিটি গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতা এবং ভোক্তা সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, খুচরা পর্যায়ে ভোজ্যতেল ১৬০ টাকায় বিক্রি করতে হবে। আমদানিকারক পর্যায়ে দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫৩ টাকা এবং পাইকারি পর্যায়ে ১৫৫ টাকা। এটি চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার জন্য প্রযোজ্য থাকবে। রাষ্ট্রের শক্তি বেশি না ব্যবসায়ীদের শক্তি বেশি আমরা দেখতে চাই।
মেয়র আরও বলেন, বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকটের সুযোগে অনেকেই খোলা তেল বেশি দামে বিক্রি করছে। তাই আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে এ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
মেয়র ব্যবসায়ীদের হুশিয়ারি করে বলেন, যদি কোন ব্যবসায়ী নির্ধারিত দরের বেশি দামে তেল বিক্রি করে তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেটরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ‘বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট চলছে। সেটা কাটিয়ে ওঠার জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খোলা সয়াবিন তেল খুচরায় সর্বোচ্চ ১৬০ টাকায় বিক্রি করা যাবে। কেউ চাইলে এরচেয়ে কমেও বিক্রি করা যাবে। তবে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি নেওয়া যাবে না।

এ সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কোনো ব্যবসায়ী খুচরা বা পাইকারি বাজারে বেশি দামে তেল বিক্রি করলে বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটির মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ, র্দীঘ এক মাস ধরে রমজানকে ঘিরে চড়া দরে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে হঠাৎ বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় ভোজ্যতেল। যার অনুসন্ধানে গত সোমবার দুপুরে দেশের অন্যতম ভোগ্যপণ্যের আড়ত খাতুনগঞ্জে যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসন ও চসিক। এ সময় আড়তপর্যায়ে কোথাও সয়াবিন তেল খুঁজে পাননি তারা। এমন সময় মেয়র নিজেই মন্তব্য করেন, বাজারকে নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ীরা তেল সরিয়েছে। নয়তো আমদানি স্বাভাবিক থাকার পরও বাজার থেকে হঠাৎ তেল উধাও হওয়ার কোন যৌক্তিক কারণ থাকতে পারে না। একইদিনে জেলা প্রশাসনের অভিযানে খাতুনগঞ্জের তিন তেল ব্যবসায়ীকে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সার্কিট হাউজে এই বৈঠক করা হয়। বৈঠকে রমজানকে ঘিরে আরও কঠোর তদারকি করা হবে বলেও মন্তব্য করেন জেলা প্রশাসক।