নিজস্ব প্রতিবেদক »
এইডস একটি জটিল রোগ। মূলত এইচআইভি নামের এক ধরনের ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট একটি রোগ। চট্টগ্রামে প্রতিবছরই বেড়ে চলছে এইডস রোগী ও পরীক্ষার সংখ্যা। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চমেক হাসপাতালের এনসিলারি ভবনের নিচতলায় অবস্থিত এন্টি রেট্রো ভাইরাল থেরাপি (এআরটি) সেন্টার। হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের অধীন এই সেন্টারটিতে এইডস আক্রান্ত রোগীদের বিনামূল্যে রোগ নির্ণয় এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়। চট্টগ্রাম অঞ্চলে যেসব সংস্থা এইডস রোগীদের নিয়ে কাজ করে সেসব সংস্থার রোগীকেও এ সেন্টারের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে ২০২০ সালে এআরটি সেন্টারের মাধ্যমে ৫৮৬ জনের এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়। ওই বছর নতুন করে ৩০ জন রোগী শনাক্ত হয়। ২০২১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০২২ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ২৬ জনের এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়। ২০২৩ সালে ২ হাজার ৭২৬ জনের দেহে এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়। তারমধ্যে ১ হাজার ৯৯৩ জন পুরুষ এবং ৭২৪ জন মহিলা ছিলেন। এদের মধ্যে আবার ৪২ জন পজিটিভ রোগী পাওয়া যায়। এদের ভেতর ১৩ জন নারী ও ২৯ জন পুরুষ রয়েছে। নেগেটিভের মধ্যে ৭১১ জন নারী এবং ১ হাজার ৯৬৪ জন পুরুষ রয়েছে।
চমেক হাসপাতালের এআরটি সেন্টারের মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফ উদ্দিন নেহাল জানান, প্রতিবছরই বাড়ছে এইডস রোগ পরীক্ষা করতে আসা রোগীর সংখ্যা। তবে আক্রান্তের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আক্রান্তদের মধ্যে বিদেশ ফেরত থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও রয়েছেন। এআরটি সেন্টারের মাধ্যমে এসব রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। বিনামূল্যে পরীক্ষার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত কিট রয়েছে। সামাজিকভাবে এইডস রোগীদের সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করলে মানুষ নিজ উদ্যোগে পরীক্ষা করতে আসবে। এতে অনেকেই ঝুঁকি মুক্ত থাকবে চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, এইডস একটি জটিল রোগ। এই রোগের চিকিৎসা সরকারিভাবে দেওয়া হচ্ছে। তবে এটি প্রতিরোধ করতে সচেতনতা দরকার। এইডস রোগের লক্ষণ দেখার সাথে সাথে পরীক্ষা করতে হবে দ্রুত। পজেটিভ হলে চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।
উল্লেখ্য, আজ ১ ডিসেম্বর, বিশ্ব এইডস দিবস। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য-‘কমিউনিটির আমন্ত্রণ, এইডস হবে নিয়ন্ত্রণ’। ১৯৮৮ সাল থেকে এইডসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সারা বিশ্বে আজকের দিনে দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশেও প্রতিবছর দিবসটি পালন করা হয়। চট্টগ্রামে দিবসটি উপলক্ষে চমেক হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পক্ষ থেকে আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করা হয়েছে।