জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) চট্টগ্রাম ওয়াসার ২ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকার ‘উত্তর কাট্টলী স্যানিটেশন প্রকল্প’ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রবিবার পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম ওয়াসা নগরীতে ৬টি ক্যাচমেন্টের মাধ্যমে স্যুয়ারেজ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ৬টি ক্যাচমেন্টের মধ্যে দুটি ক্যাচমেন্ট ছাড়া (ক্যাচমেন্ট ৩ ও ৬) অবশিষ্ট ৪টি ক্যাচমেন্ট একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭৯৭ দশমিক ২১৫২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি টাকা ৩৬২ দশমিক ০৩৫০ কোটি এবং অবশিষ্ট টাকা হচ্ছে ফ্রান্সভিত্তিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার (এফডি)। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর ২০২৯ পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হলো ৫০ হাজার ঘনমিটার (দিনে) ক্ষমতাসম্পন্ন পয়ঃশোধনাগার–১টি, পয়ঃপাইপলাইন ৯৮ কিলোমিটার, গৃহ সংযোগ ৮১০০টি, অনসাইট স্যানিটেশন এবং ফিক্যাল স্ল্যাজ ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রম মহানগরীর উত্তর কাট্টলী ক্যাচমেন্টের বিভিন্ন বস্তি এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন, কমিউন্যাল সেপটিক ট্যাংক, পাবলিক টয়লেট ও ডিইডব্লিওএটিএস নির্মাণ ও পুনর্বাসন কাজ মোট ৭৯৭টি।
WASA মানে ওয়াটার অ্যান্ড স্যুয়ারেজ অথরিটি। অথচ প্রতিষ্ঠার এতকাল পরেও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ নগরে শুধু পানি সরবরাহের কাজটিই করেছে স্যুয়ারেজ তথা পয়ঃনিষ্কাশনের কাজটি করেনি। অদ্ভুদ শোনালেও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বর্তমানে কোনো পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। সমস্ত পয়ঃবর্জ্য পতিত হয়েছে বিভিন্ন নালা, খাল বেয়ে কর্ণফুলী নদীতে। মহানগরীতে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার সূচনা এবং ক্রমান্বয়ে নগরবাসীকে আধুনিক পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার আওতায় আনার লক্ষ্যে নগরীর পরিকল্পিত স্যানিটেশন ব্যবস্থা প্রবর্তনে ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম ওয়াসা স্যানিটেশন মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করে। এতে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে মহানগরীর ওয়েস্ট ওয়াটার সংগ্রহ ও পরিশোধন অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ চিহ্নিত করা হয়েছে, যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের সুপারিশ রয়েছে। মাস্টার প্ল্যানে পুরো মহানগরীকে ৬টি ক্যাচমেন্ট এলাকায় ভাগ করে প্রতিটি ক্যাচমেন্ট এলাকার পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনে ১টি পয়ঃশোধনাগার (এসটিপি) এবং পুরো শহরের জন্য ২টি ফিক্যাল স্ল্যাজ শোধনাগার ব্যবস্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
সরকারের এই পদক্ষেপে আমরা সন্তুষ্টি জানাই। আশা করি যথাসময়ে কাজটি শেষ হবে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।