গোপালগঞ্জ রণক্ষেত্র

এনসিপির সমাবেশ ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষ । ১৪৪ ধারা জারি

বিজিবি টহল

সুপ্রভাত ডেস্ক »

জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির পদযাত্রা ও সমাবেশকে ঘিরে সকাল থেকে দফায় দফায় হামলা, সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও গুলির শব্দে গোটা গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

হাতবোমা, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপের বিকট শব্দ আর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে আতঙ্কে শহরের অধিকাংশ এলাকায় দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষের চলাচলও সীমিত হয়ে পড়েছে।

এই অবস্থায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধরা জারি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেছেন, “জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছেন।”

গোটা শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি সবশেষ চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এসব হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় বেশ কিছু মানুষ আহত হয়েছেন। তবে সেই সংখ্যা কেউ নিশ্চিত করতে পারেননি।

এনসিপির এই পদযাত্রা ও সমাবেশ ঘিরে মঙ্গলবার থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলানো হয়।

বুধবার সকালে এনসিপি নেতারা গাড়িবহর নিয়ে শহরে ঢোকার আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।

এসবের মধ্যে বুধবার বেলা দেড়টার দিকে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল করে এসে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায় বলে এনসিপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে নেতারা পুলিশি নিরাপত্তায় টেকেহাট হয়ে মাদারীপুর যাওয়ার পথে দুপুর পৌনে ৩টার দিকে শহরের লঞ্চ ঘাট এলাকায় গোপালগঞ্জ সরকারি কলেজের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলার মুখে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এনসিপি নেতারা গোপালগঞ্জে আটকা পড়েছেন। তারা এখন জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আছে বলে বেশ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের খবরে বলা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে এনসিপির একজন নেতাকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতেও দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশস্থলের চেয়ারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম রাস্তায় এনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে প্রচুর গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। সমাবেশ এলাকায় আগুন দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হামলাকারীদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। তারা চৌরঙ্গী মোড়ে রয়েছেন। সেখানে প্রচুর লোকজন। তাদের হাতে লাঠি দেখা গেছে।

তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করছেন। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাস ছুড়ে তাদের পিছু হটানোর চেষ্টা করে। শহরে থমথমে পরিস্থিতি দেখা গেছে।