সুপ্রভাত ডেস্ক »
বুধবার (১৬ জুলাই) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি শেষে ফেরার সময় হামলার মুখে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন এনসিপি’র শীর্ষ নেতারা। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের পাহারায় তারা গোপালগঞ্জ ছাড়েন। এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে হামলাকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের পর প্রথমে শহরে ১৪৪ ধারা এবং পরে রাত ৮টা থেকে কারফিউ জারি করা হয়।
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় চার জনের মৃতদেহ সদর হাসপাতালে এসেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসির।
গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেশ বিশ্বাস বিবিসি বাংলাকে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে জানান, এখন পর্যন্ত চার জনের মৃতদেহ হাসপাতালে এসেছে। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ওই সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অনেকে চিকিৎসা নিলেও তাদের সঠিক সংখ্যা এখনো জানা যায়নি।
গোপালগঞ্জে এনসিপির সভা ঘিরে কয়েক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষের পর কারফিউ জারি করেছে সরকার।
রাত ৮টা থেকে পরদিন বিকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেছেন, ধৈর্য ধরে তারা গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছেন।তিনি বলেছেন, ”উচ্ছৃঙ্খলতা যা হয়েছে, সেটা যতটুকু সম্ভব আমরা ধৈর্যের সাথে প্রশমন করার চেষ্টা করছি, আমরা এখন রিইনফোর্সড (আরো পুলিশ সদস্য পাঠানো) করছি, পুরো জিনিসটা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। আমরা লিথ্যাল (প্রাণঘাতী অস্ত্র) কোনো কিছু ব্যবহার করছি না, তাই আমাদের একটু সময় লাগছে।”
এনসিপির সমাবেশ ঘিরে দুপুর থেকে গোপালগঞ্জে উত্তেজনা চলছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে যদিও সেনা-পুলিশ পাহারায় এনসিপির নেতাকর্মীদের গোপালগঞ্জ শহর থেকে বের করে আনা হয়েছে।
এনসিপি’র কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়েছে।
গোপালগঞ্জে সহিংসতার প্রেক্ষাপটে বুধবার বিকেলে অন্তর্বতী সরকারের তরফ থেকে এই বিবৃতি দেয়া হয়।
বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, গণ অভ্যুত্থান আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে তরুণ নাগরিকদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশে বাধা দিয়ে তাদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। নিষ্ঠুর আক্রমণের মাধ্যমে ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্ঠি, পুলিশ ও গণমাধ্যমের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
”নিষিদ্ধ ঘোষিত ছঅত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগ অ্যাকটিভিস্টদের এই জঘন্য কর্মকাণ্ড বিনা বিচারে ছেড়ে দেওয়া হবে না। দায়ীদের দ্রুত চিহ্নিত করা হবে এবং বিচার নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের ওপর এরকম সহিংসতা করার জায়গা নেই,” বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ায় সেনাবাহিনী এবং পুলিশের প্রশংসা করা হয়েছে বিবৃতিতে। এছাড়া হুমকির পরও সমাবেশ চালিয়ে যাওয়ায় কর্মসূচির আয়োজকদের প্রশংসা করা হয়।