মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, নগরীর গৃহকর নিয়ে করদাতারা যে বিভ্রান্তিতে ছিলেন তা নিরসনে আপিল বোর্ডের গণশুনানির মাধ্যমে করদাতাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে সহনীয় পর্যায়ে চূড়ান্ত গৃহকর নির্ধারণ করা হচ্ছে। করদাতাদের সামর্থ অনুযায়ী কর দেয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে। চসিকের কর্মকা- পরিচালনা করতে গিয়ে গৃহকর ছাড়া অন্য কোন আয়ের পথ নেই। সরকার কর্তৃক আগে যে থোক বরাদ্দ দেয়া হতো তাও বর্তমানে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সহনীয় পর্যায়ে কর নির্ধারণপূর্বক করের আওতা বৃদ্ধি করে চসিকের বিশাল ব্যয় নির্বাহ করতে হবে।
তিনি গতকাল সোমবার সকালে আন্দরকিল্লাস্থ পুরাতন নগর ভবনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চসিক রাজস্ব বিভাগের ৩নং সার্কেলের ওয়ার্ড/মহল্লা হোল্ডিং সমূহের বিপরীতে ‘পি’ ফরমে প্রাপ্ত আপত্তি সমূহ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গঠিত রিভিউ বোর্ড-৩ এর গণশুনানিতে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন।
সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাসেমের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, রিভিউ বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংরক্ষিত কাউন্সিলর কাউন্সিলর নীলু নাগ, হাজী নুরুল হক, গাজী মো. শফিউল আজম, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত, রিভিউ বোর্ডের সদস্য প্রকৌশলী অসীম সেন, অ্যাডভোকেট রাসেল সরকার ও কর কর্মকর্তা মো. সেলিম সিকদার প্রমুখ।
মেয়র বলেন, একটি মহল আয়তনের উপর কর মূল্যায়ন করার যে দাবি জানাচ্ছে তা আমলে নিলে কর মূল্যায়ন সহনীয় হবে- তা ভ্রান্ত ধারণা। সে ক্ষেত্রে ভাড়ার উপর কর মূল্যায়ন যতটুকু সহনীয় করা যায় তা আয়তন ভিত্তিক মূল্যায়নে সম্ভব নয়। করদাতারা চসিককে যে কর প্রদান করছে তা ২০১০ সালের মূল্যায়নকৃত। বিগত সময়ে দুই দফা কর মূল্যায়নের বিধি-বিধান থাকলেও তা স্থগিত ছিল। এতে করদাতারা সেই কর থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বিগত ২০১৭ সালের কর মূল্যায়ন করার সময় বর্তমান মেয়র দায়িত্বে ছিলেন না। সে সময় কর নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি ও জনগণের আন্দোলন সংগ্রামের ফলে সে সময় স্থগিত হয়। ২০২২ সালে মন্ত্রণালয় থেকে তা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত আসে। এরই প্রেক্ষিতে করদাতাদের কাছ থেকে চসিক কর আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ করে। ২০১৭ সালের মূল্যায়নটির ওপর করদাতাদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয় এবং এতে অনেক অসঙ্গতিও পরিলক্ষিত হয়। সে বিবেচনায় সহনীয় কর নির্ধারণের জন্য ওয়ার্ড ওয়ারী রিভিউ বোর্ড গঠন করা হয়। রিভিউ বোর্ডে যারা আপিল করেছে তাদের সহনীয় পর্যায়ে কর নির্ধারণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বিষয়টির ওপর করদাতাদের আস্থা সৃষ্টির জন্য মেয়রের উপস্থিতিতে অঞ্চল ভিত্তি গণশুনানির আয়োজন করা হয়। যারা এ গনশুনানিতে অংশ নিয়েছেন তারা সকলেই সন্তুষ্ট হয়ে ফিরেছেন। তিনি সম্মানিত করদাতাদের চলমান আপিল কর্মকা-ে নির্দ্বিধায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
মেয়র আরও বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একমাত্র কর্পোরেশন যাতে বিশাল কলেবরে নগরবাসীর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে যাচ্ছে। এতে ৭৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৪৬৩টি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ও ৫৬টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র পরিচালনা করছে। এ কর্মকা- পরিচালনা করতে গিয়ে বার্ষিক প্রায় ৫০ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হয় যা সম্পূর্ণ কর্পোরেশনের তহবিল থেকে বহন করতে হয়। এ বিশাল অংকের অর্থ নগরবাসীর উন্নত জীবন নিশ্চিত করার জন্য ব্যয় করা হচ্ছে। এই কর্মকা- নির্ধারিত সেবা সমূহের পাশাপাশি একটি মহৎ উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে । গতকাল গণশুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য ১৫০ জন নোটিশ দাতার মধ্যে ১২০ জন অংশ নেন। বিজ্ঞপ্তি