নিজস্ব প্রতিবেদক »
দুই মাস ধরে গরুর মাংসের দাম কিছুটা কমতির দিকে থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে চড়া অন্যান্য নিত্যপণ্যের বাজারে ফেরেনি স্বস্তি। অনেক ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার নগরীর বকসিরহাট ও রেয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে যে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছিল কেজিপ্রতি ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা। তা আজ বিক্রি হয়েছে ৯৫০ টাকার বেশি। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকার চেয়ে বেশি।
বকসিরহাটের গরুর মাংস ব্যবসায়ীরা বলেন, চট্টগ্রামের বাজারে গরুর সংকট রয়েছে। তাছাড়া শীতকালে বিয়ে ওরসসহ নানা অনুষ্ঠান থাকার কারণে গরুর চাহিদা বেড়েছে। ফলে বাজারে ৭ মণ ওজনের গরুর দাম বেড়েছে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকার বেশি। তাই গরুর মাংসের বাজার চড়া।
বকসিরহাটে গরুর মাংস কিনতে আসা মো. তানভীর বলেন, ‘পারিবারিক অনুষ্ঠানের জন্য মাংস কিনতে আসলাম। এসে দেখি ব্যবসায়ীরা বেশ চড়া দরে বিক্রি করছে। বাধ্য হয়ে ৯৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস কিনতে হলো।’
এদিকে গরুর মাংসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছের দামও। কেজিপ্রতি ২০০ টাকার নিচে কোন মাছই পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। তাছাড়া সামুদ্রিক মাছের যোগান কিছুটা কম থাকলেও তা পূরণ করছে দেশীয় চাষের মাছ।
বাজারে পাঙ্গাস, নাইলোটিকা, ব্রিগেড কাপ বিক্রি করছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। আর কাতলা, রুই, সিলভার কাপ বিক্রি করছে ২৬০ থেকে ৩৫০ পর্যন্ত। সমুদ্রের কোরাল ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, মাইট্যা ৩০০ টাকা, রুপচাঁন্দা ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা ও চিংড়ি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা।
বকসিরহাটের মাছ ব্যবসায়ীরা বলেছেন, তীব্র শীতের কারণে জেলেরা সাগরে তেমন যাচ্ছেন না। যার ফলে বাজারে সামুদ্রিক মাছের যোগান সংকট রয়েছে। তাই দাম বাড়তি। সমুদ্রের মাছের যোগান বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাংকর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। বেড়েছে মসুর ডালের দামও। প্রতি কেজি ভালো মানের মসুর ডাল ১২০ থেকে ১৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগের থেকে ১০ টাকা বেশি।
এদিকে বাজারে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়ে ১৭৩ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা গত দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছিল ১৬৯ টাকায়। ৫ লিটারের বোতলের দাম ৮২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৪৫ টাকা করা হয়েছে। চিনির দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। প্রতি কেজি প্যাকেটের আটার দাম এখন ৬৫ টাকা। ময়দার দাম বেড়ে হয়েছে কেজিপ্রতি ৮০ টাকা। তাছাড়া দেশি পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকা। এছাড়া আদা ২০০ থেকে ২৩০ টাকা ও রসুন একই দামে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে ।
অন্যদিকে চড়া দামের মধ্যে সপ্তাহের ব্যবধানে স্থিতিতে রয়েছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির বাজার। ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি ১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজন ৫ টাকা বেড়ে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়।
এদিকে টানা কয়েকমাস বাড়তি থাকার পর গত সপ্তাহ থেকে কমতির দিকে সবজির বাজার। সরবরাহও রয়েছে স্বাভাবিক। গত সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কমেছে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা।
খুচরা বাজারে শীতকালীন সবজির মধ্যে টমেটো ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ২৫ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, শিম ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া আর গ্রীস্মকালীন সবজি পটল, তিতাকরলা, শসা, ঝিঙ্গে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৭০ টাকায়। কাঁচামরিচ কেজিতে ৬০ থেকে ৭০ টাক। চড়া আলুর দামও কমতির দিকে। নতুন ও পুরোনো আলু বিক্রি করছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।