নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি »
গত ১৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) দিবাগত ভোর রাতে মোটর সাইকেল চুরির সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত মামুনের স্ত্রী মুক্তা আক্তারের দায়ের করা এজাহারকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি বাতেন মৃধা’র স্বাক্ষরিত এজাহারে দেখা গেছে, মামলায় মাত্র তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার এজাহারে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এরমধ্যে এক নম্বরে মো. শাকিল নামে এক যুবকের নাম দেয়া হয়েছে। বাকী দুইজন হলেন, রফিকুল আলম ও দিদারুল আলম। রফিকুল আলম আওয়ামী লীগের নেতা ও খাগড়াছড়ি পৌরসভার সাবেক মেয়র। আরেক আসামি দিদারুল আলম তাঁর ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এই তিনজনসহ ১০ থেকে ১২ জন অজ্ঞাতনামা ‘উপজাতি ও বাঙালি’র কথাও আসামি হিসেবে উল্লেখ আছে। গত বৃহস্পতিবার এ মামলা করা হয়।
গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়ি সদরে মোটরসাইকেল চুরিকে কেন্দ্র করে গণপিটুনিতে মো. মামুন (৩০) নামের এক বাঙালি যুবকের মৃত্যু হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে এ হত্যার প্রতিবাদে দীঘিনালায় বাঙালিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বাঙালিদের অভিযোগ, মিছিলটি বোয়ালখালী বাজার অতিক্রম করার সময় পাহাড়িরা বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, সংঘর্ষের একপর্যায়ে দীঘিনালার লারমা স্কয়ারে বিভিন্ন দোকান ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়।
দীঘিনালা উপজেলায় সংঘর্ষের জেরে খাগড়াছড়ি জেলা সদর, পানছড়ি ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় ৩ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ১৫ জন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল ত্রিপুরা (৩০)। গত শুক্রবার রাঙামাটিতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে পাহাড়ি ও বাঙালিদের সংঘর্ষে নিহত হন অনিক কুমার চাকমা। তিনি কর্ণফুলী ডিগ্রি কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী। আহত হন অন্তত ৫৫ জন।
মামলায় যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাঁরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এবং নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
মামুন হত্যাকান্ডের ঘটনার প্রতিবাদে নেতৃত্বদানকারীরা মামলাটিকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা বলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন।