সুপ্রভাত ডেস্ক »
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে, আমরা দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে চাই। ঠিক যেভাবে আজ থেকে দুই দশক আগে বিএনপি সরকারের সময় বাংলাদেশে মিডিয়া নির্ভয়ে সরকারের সমালোচনা করতে পারত।’
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপি আয়োজিত ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা: ৩১ দফার আলোকে সংস্কার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সবার আদর্শিক ঐকমত্য আছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা সবাই এমন দেশ গড়তে চাই, যেখানে আর কখনো ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না। আমরা সবাই একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ চাই, যেখানে জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা কেউ কেড়ে নেবে না। আমরা সবাই একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত বাংলাদেশ চাই, যেখানে গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার নিশ্চিত করবে জনগণের মালিকানা ও অংশীদারিত্ব।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের সময় আমরা তথাকথিত উন্নয়নের রাজনীতি দেখেছি। কিন্তু পতিত সেই রাজনীতির ভিত্তি ছিল দুর্নীতি, দুঃশাসন ও দুর্বৃত্তায়ন। অন্যদিকে জনগণের ভোটে বিএনপি যদি সরকার গঠন করে, আপনারা দেখতে পাবেন, আমাদের ৩১ দফার আলোকে, জনগণের ক্ষমতায়ন ও অংশীদারিত্বের রাজনীতি। আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি হবে আইনের অনুশাসন, মানবাধিকার এবং বাকস্বাধীনতা।’
‘আমরা মনে করি, একটি দেশে নির্বাচিত সরকারের প্রথম কাজ হচ্ছে রাষ্ট্রকে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে পরিচালনা করা, যেন রুলস-বেসড অর্ডার ঠিক থাকে। রাষ্ট্রে যদি আইনের অনুশাসন থাকে, জবাবদিহিতা ও সুশাসন থাকে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই সেখানে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন হবে। আওয়ামী লীগের মতো পরিবারতন্ত্র ও অলিগার্ক শ্রেণী তৈরী হবে না; বিভাজন ও বৈষম্য থাকবে না; সমাজের প্রতিটি স্তরে দলীয়করণ ও প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয় ঘটবে না,’ যোগ করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা যদি একটি রুলস-বেজড রাষ্ট্র কাঠামো নিয়ে আসতে পারি, সারা পৃথিবী থেকে প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট ও প্রাইভেট ক্যাপিটাল নিজ গতিতেই বাংলাদেশে আসবে। আমাদের পাবলিক সেক্টরের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে; দেশের উন্নয়ন ও উৎপাদনে ভূমিকা রাখবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই, আগামীর বাংলাদেশে আর কোনো ব্যক্তি, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও স্বেচ্ছাচারী হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারের প্রতিটি লেভেলে নিশ্চিত করা হবে—কেউ জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে না, কেউ আইনের ঊর্ধে না।’
‘বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে, আমরা দল-মত নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে চাই। ঠিক যেভাবে আজ থেকে দুই দশক আগে, বিএনপি সরকারের সময়, বাংলাদেশে মিডিয়া নির্ভয়ে সরকারের সমালোচনা করতে পারতো, কার্টুন আঁকতে পারতো। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, আমাকে নিয়ে এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে, মিডিয়ার একাংশ ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করেছিল; মিডিয়া ট্রায়াল ও প্রপোগান্ডা ক্যাম্পেইন করেছিল। কিন্তু আমরা তার প্রতিদানে কোনো মিডিয়ার কণ্ঠরোধ করিনি, কাউকে হেনস্থা করিনি, কোনো সম্পাদককে জেলে পাঠাইনি,’ বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৬ বছরে আমার নিজের, আমার দলের এবং গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি তথা আপনাদের অনেকের ফ্রিডম অফ স্পিচ, ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেশন এবং ফ্রিডম অফ এসোসিয়েশন সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়েছে। সেই উপলব্ধিকে ধারণ করে, আমরা সকল নাগরিক, বিশেষত মানবাধিকারকর্মী, সংবাদকর্মী, ও সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করব।’
‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলা, যেখানে ইউটিউব, ফেইসবুক, ও অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিজেদের ভাবনা প্রকাশের কারণে, কিংবা প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিষয়ে মন্তব্যের দায়ে, কাউকে হেনস্থা করা হবে না। সত্য গোপন করতে মেইনস্ট্রিম ও সোশ্যাল মিডিয়া যেমন বাধ্য থাকবে না, তেমনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে সেটির প্রচারেও সরকার কাউকে চাপ দেবে না। তবে দেশ গঠনের দায়িত্ব সবার, এবং আমরা মিডিয়ার কাছ থেকে নিরপেক্ষ এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করি,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা ও বিচার, পরোয়ানা ছাড়াই গণগ্রেপ্তার এবং চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে যে ভয়ের সংস্কৃতি গত ১৬ বছরে গড়ে উঠেছিল – জনগণের ভোটে নির্বাচিত বিএনপি সরকারের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে সেটি নির্মূল করার জন্য। জাতিসংঘ প্রণীত মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র অনুসারে আমরা নিশ্চিতের চেষ্টা করবো প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা।’
‘ক্ষমতার পরিবর্তন মানে শুধু একটি দল থেকে অন্য দলের কাছে রাষ্ট্রের ক্ষমতা হস্তান্তর নয়’ মন্তব্য করে তারেক বলেন, ‘ক্ষমতার পালাবদলে এমন এক রাজনৈতিক সংস্কৃতির সূচনা হওয়া উচিত, যেখানে সমাজের পরিবর্তিত অবস্থা ও জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখা যায়। ফ্যাসিবাদের পতনের পর গত ৩ মাসে, বিএনপির জাতীয় নেতৃবৃন্দ এমন অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, যাতে রাজনীতিতে আধুনিকায়নের উন্মেষ ঘটে। সেই সব উদ্যোগকে, তারুণ্যের উদ্দীপনায়, দেশজুড়ে প্রতিপালন করেছে বিএনপির তৃণমূল। ফলে আপনারা দেখেছেন, অতীতের মতোই কিভাবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বন্যার সময় সর্বোচ্চ সাংগঠনিক শক্তি ও সাহায্য নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে; গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত পরিবারগুলোকে আন্তরিক সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করছে; জনদুর্ভোগ এড়াতে মোটরসাইকেল বহর বা শোভাযাত্রা থেকে নিজেদের বিরত রাখছে; রাজনৈতিক প্রোগ্রাম শেষে অত্র স্থান পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করছে; নগরের দেয়াল থেকে ব্যানার ও পোস্টার অপসারণ করছে; ত্বরান্বিত করার চেষ্টা করছে জনসম্পৃক্ত ও সমাজবান্ধব রাজনীতিকে।’
‘আপনাদের নিশ্চই মনে আছে, শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সীমাহীন খুন, হামলা, ধর্ষণ, ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়লেও, দলীয়ভাবে তাদের শাস্তি দেওয়ার কোনো ইতিহাস নেই। সাম্প্রতিক ঘটনাবলী থেকে দেখা যায়, দেড় হাজারেরও অধিক গণতন্ত্রকামী মানুষকে গণঅভ্যুত্থানে হত্যা করার পরেও, আওয়ামী লীগের কোনো নেতার কোনো অনুতাপ, অনুশোচনা বা আত্নসমালোচনার নজির নেই।’
‘অপরদিকে আমরা সবাই জানি যে, বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা রয়েছে। তারপরেও, এত বিশাল সংগঠনের নাম ব্যবহার করে কেউ বিচ্ছিন্নভাবে কোনো অপরাধে জড়িত হলে, তা জানামাত্রই আমরা দ্রুত সাংগঠনিক পদক্ষেপ নিয়েছি। ৫ আগস্টের পরে, দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছিল, পুলিশের অনুপস্থিতি ছিল। সেই সময়ে দলীয়ভাবে বিএনপি সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে; দেশকে আগলে রেখেছে; নিশ্চিত করেছে জননিরাপত্তা ও রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা। প্রতিহিংসার রাজনীতিতে না জড়িয়ে সহিংসতাকে প্রতিহত করেছে এবং সহাবস্থান নিশ্চিত করেছে,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসরদের ষড়যন্ত্র ঠেকাতে পূজার সময়, বিএনপির নেতা-কর্মীরা মন্দির ও উপাসনালয় পাহারা দিয়ে হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ সকল মানুষের সুরক্ষায় পাশে দাঁড়িয়েছে। ধর্ম-বর্ণ, কিংবা ভৌগোলিক-আদর্শিক অবস্থান নির্বিশেষে, প্রত্যেক নাগরিক যেন তার ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অধিকার বিনা বাধায় উপভোগ করতে পারে – সেই লক্ষ্যেই মুক্তিযোদ্ধারা লাখো প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন।’
‘তাই স্বাধীন বাংলাদেশেও তথাকহিত সংখ্যালঘু হিসেবে আমরা কাউকে বিবেচনা করি না। প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই বিএনপির নীতি। এই বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শই বিএনপির রাজনীতি। আমরা বিশ্বাস করি – ধর্ম, দল ও মত যার যার – তবে রাষ্ট্র সবার,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজ আমরা ৩১ দফার যে আলোচনা এখানে করেছি; তা নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে; আকাঙ্খার আলো দেখাবে পরিবর্তনকামী গণমানুষকে। রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের এই রূপরেখা তৈরি হয়েছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০, বিএনপির জনসম্পৃক্ততা ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার আলোকে প্রথমে প্রদত্ত ২৭ দফার ওপর ভিত্তি করে, যা পরবর্তীতে যুগপৎ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শরিক সকল রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যে ৩১ দফায় পরিণত হয়।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে আলোচিত প্রায় সব সংস্কার প্রস্তাবই আমাদের ৩১ দফায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আমি সংস্কারের উদ্দেশ্য বলতে সেটিই বুঝি, যে সংস্কারের মাধ্যমে সংবিধানের কয়েকটি বাক্য নয়, বরং মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে; অর্থাৎ একজন মানুষের রোজগারের ব্যবস্থা হবে, তার ও পরিবারের আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তা ও সঞ্চয় নিশ্চিত হবে। আমি সংস্কার বলতে সেটিই বুঝি, যা কর্মসংস্থানের মাধ্যমে প্রতিটি নারী ও পুরুষের বেকারত্ব সমস্যার সমাধান করবে। যে সংস্কার নারীদের সম্মান, স্বাধীনতা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করবে।’
‘যে সংস্কার সকল মানুষের জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। যে সংস্কার দেশের সন্তানদের আধুনিক শিক্ষা ও নৈতিক মূল্যবোধ গঠন করবে। যে সংস্কার মানুষকে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা দেবে। যে সংস্কার বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম স্থিতিশীল রাখবে। আমি সংস্কার বলতে সেটিই বুঝি, যা কৃষক, শ্রমিক এবং সকল কর্মজীবী মানুষের ন্যায্য ও প্রাপ্য মজুরি নিশ্চিত করবে,’ বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন ,’বাংলাদেশে স্বৈরাচারী ব্যবস্থার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেটি নিশ্চিত করতে বিএনপি সংবিধানে এমন ব্যবস্থা রাখতে চায়, যাতে কেউ পরপর দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারে। আমরা আইন, বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রাখতে চাই। রাষ্ট্র পরিচালনায় সমাজের জ্ঞানী-গুণীদের প্রতিনিধিত্ব এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে চাই।’
‘আমাদের লক্ষ্য তরুণ ও বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান, আর কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত যোগ্যতা অনুযায়ী বেকার ভাতা প্রবর্তন। আমরা নিশ্চিত করতে চাই সর্বস্তরে নারীর অংশগ্রহণ, তৃণমূলের ক্ষমতায়ন এবং আবারো ঐতিহাসিক খাল কাটা কর্মসূচির বাস্তবায়ন। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, জ্বালানি, জলবায়ু, অর্থনীতি – সব ক্ষেত্রে আনতে চাই যুগোপযোগী আমূল পরিবর্তন। যেন তৈরী হয় দক্ষ মানবসম্পদ; বৃদ্ধি পায় রপ্তানিমুখী শিল্প ও প্রবাসীদের রেমিট্যান্স; স্থাপিত হয় মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা।’
‘ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, কৃষক ও উৎপাদনকারীদের জন্য ন্যায্য মূল্য, চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা ও বহুভাষার প্রশিক্ষণ, বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা, এবং সবার জন্য পর্যায়ক্রমিক আবাসন সুবিধা ও সামাজিক সুরক্ষা – এই পরিকল্পনাগুলো ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-গোষ্ঠী-সমতল-পাহাড়ি নির্বিশেষে – সুষম ও সমঅধিকারের আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণে – একটি ঐকমত্যের ভিশন বলেই আমি মনে করি।’
তারেক রহমান বলেন, ‘পরিবেশ, পরিস্থিতি, দেশের প্রয়োজন এবং মানুষের চাহিদার সাথে মানিয়ে নিতে ৩১ দফাকে সংযোজন, বিয়োজন, পুনর্বিন্যাস বা পরিবর্তনও করা যেতে পারে। তবে তা হবে স্টেকহোল্ডার কন্সালটেশন তথা অংশীজন পরামর্শ ও জনমত ঐক্যের মাধ্যমে। সময়ের সাথে এই ৩১ দফাই একদিন আমাদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য – তথা সুখী ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ অর্জনের দ্বার উন্মোচন করবে – যা বিশ্ব মানচিত্রে পরিচিত হবে কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ, শিল্পায়নে সাফল্যমণ্ডিত, অর্থনীতিতে গতিশীল, মানবসম্পদে সমৃদ্ধ, এবং সামাজিকভাবে ঐক্যবদ্ধ একটি প্রগতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে।’
‘বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য কেবল ক্ষমতায়ন নয়। বরং, রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন এবং জনগণের অভিপ্রায়ের বহিঃপ্রকাশও এর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আজকে আমরা যারা এখানে সমবেত হয়েছি, দেশে-বিদেশে আমরা যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে সবসময় ভাবি; আমাদের গড়ে তুলতে হবে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, উদার ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। আমাদের সবাইকে এক হয়ে এগিয়ে যেতে হবে বহু দূরে। এই অগ্রযাত্রার গতি হতে হবে দ্রুত তবে স্থির; লক্ষ্য হতে হবে সুনির্দিষ্ট,’ বলেন তিনি।