বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে ‘বাংলাদেশে ক্যান্সারের বোঝা: জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি’ শীর্ষক এক গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়। সেখানে জানানো হয়, বছরে প্রতি লাখে নতুন করে ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছেন ৫৩ জন, আর মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশের জন্য দায়ী এই রোগ।
দেশে ৩৮ ধরনের ক্যান্সারে মানুষ আক্রান্ত হয় জানিয়ে গবেষণায় বলা হয়, এর মধ্যে স্তন, মুখ, পাকস্থলী, শ্বাসনালী ও জরায়ুমুখ ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বেশি। গবেষণায় দেখা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে ১৬ দশমিক ৮ শতাংশই স্তন ক্যান্সার রোগী। ঠোঁট ও মুখগহ্বর ক্যান্সার আক্রান্তের হার ৮ দশমিক ৪ শতাংশ, পাকস্থলী ক্যান্সার আক্রান্তের হার ৭ শতাংশ, স্বরযন্ত্র ক্যান্সার আক্রান্তের হার ৭ শতাংশ এবং জরায়ুমুখ আক্রান্তের হার ৫ দশমিক ১শতাংশ।
ফুসফুস, শ্বাসনালী ও পাকস্থলীর ক্যান্সারে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে।
ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব বিবেচনায় প্রতি লাখে আক্রান্তের সংখ্যা ১০৬ জন (পুরুষের ক্ষেত্রে প্রতি লাখে ১১৮ জন এবং নারীর ক্ষেত্রে প্রতি লাখে ৯৬ জন)।
ক্যান্সার রোগীদের ৯২ দশমিক ৫ শতাংশ ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সী। ১৮ বছরের কম বয়সী ক্যান্সার রোগী আছেন ২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ৭৫ বছরের বেশি বয়সী ক্যান্সার রোগী আছেন ৫ দশমিক ১ শতাংশ।
ক্যান্সার বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর একটি।
এ রোগ প্রতিরোধে কিছু সুপারিশ করা আছে। তা হলো, দেশব্যাপী ক্যান্সার রেজিস্ট্রি শক্তিশালী করা। সরকারি হাসপাতাল গুলির মধ্যে নেটওয়ার্কিং স্থাপন করা। এছাড়াও, সরকারী এবং বেসরকারী হাসপাতালের মাঝেও সমন্বয় স্থাপন করতে হবে। বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি। সুতরাং, প্রাথমিক সনাক্তকরণের জন্য ক্যান্সার স্ক্রীনিং সিস্টেম অপরিহার্য। ভর্তি হওয়া ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে পরিপাকতন্ত্র, শ্বাসযন্ত্র এবং ইন্ট্রাথোরাসিক অঙ্গের ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তাই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত যেমন গণ সচেতনতা, মানুষের আচরণ পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি। সে সঙ্গে আবহাওয়া দূষণও একটি বড় কারণ ক্যান্সারের জন্য। কাজেই সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ক্যান্সার চিকিৎসা ও প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।