কভিড-১৯ মহামারির সময়ে কোরবানির পশুর হাট নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়েছে বিশেজ্ঞদের। এ সময়ে সামাজিক দূরত্ব না মানা, মাস্ক না পরা ইত্যাদি বিষয় ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়িয়ে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তাঁরা।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এ বছর ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। ভাইরাসের বিস্তার রোধে ঈদের ছুটিতে এই চার এলাকা থেকে অন্যান্য স্থানে যাতায়াত বন্ধ রাখারও পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। বাংলাদেশে নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে এই চার জেলা।
শুক্রবার পরামর্শক কমিটির ১৪তম অনলাইন সভায় যেসব সুপারিশ করা হয় সেগুলো পরে কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সহিদুল্লা ও সদস্য সচিব মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে জাতীয় পরামর্শক কমিটি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে। কোভিড-১৯ সংক্রমণ এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এ অবস্থায় ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অবাধ জীবনযাত্রায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতীয় কমিটি।
কমিটি তাদের সুপারিশে বলেছে, ‘ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে যেন পশুর হাট স্থাপন না করা হয়। এক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পশু কেনাবেচার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এছাড়া অন্যান্য জায়গায় সংক্রমণ প্রতিরোধ নীতিমালা পালন সাপেক্ষে কোরবানির পশুর হাট বসানো যেতে পারে।’
সে সঙ্গে কোরবানি পশুর হাট স্থাপন ও পশু জবাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম অনুসরণ করার সুপারিশ করেছে জাতীয় কারিগরী পরামর্শক কমিটি। কমিটি কোরবানির পশুর হাট শহরের অভ্যন্তরে না বসানোর সুপারিশ করেছে।
এছাড়া পশুর হাট খোলা ময়দানে করতে হবে, যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। পঞ্চাশোর্ধ্ব এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের পশুর হাটে যাওয়া থেকে বিরত থাকার সুপারিশ করেছে জাতীয় কমিটি। হাটে প্রবেশ ও বের হওয়ার পৃথক রাস্তা রাখা, হাটে আসা সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, পশু জবাই বাড়িতে না করে শহরের বাইরে সিটি করপোরেশন নির্ধারিত স্থানে করার সুপারিশ করেছে জাতীয় কমিটি।
বিগত কয়েকবছর ধরে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রির জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এই পদ্ধতি অনেক ঝামেলামুক্ত বলে অনেকে এভাবেই কেনা-বেচা করতে চান। এ বছর যেহেতু মহামারির কারণে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে সেহেতু এই পদ্ধতিতে কেনা-বেচা করলে কোনো পক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
নগরে কোরবানির পশুর হাট নিয়ন্ত্রণ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এবিষয়ে এখন থেকে উদ্যোগ নিলে পরে আর জটিলতা তৈরি হবে না। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনকে সাহায্য করতে পারে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। জনগণকে সচেতন করলে এবং পরামর্শক কমিটির সুপারিশ মেনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর থাকলে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কঠিন হবে বলে মনে হয় না।