সুপ্রভাত ডেস্ক :
আমেরিকায় করোনার সংক্রমণ যখন প্রায় শীর্ষে, ভারতের কাছ থেকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন পেয়ে বেজায় খুশি হয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার জন্য ভারতকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছিলেন। কিন্তু জুনের মাঝামাঝি সেই হোয়াইট হাউসই হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের উপর এই ম্যালেরিয়ার ওষুধ ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই পুনরাবৃত্তি এ বার বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (হু)-র। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের সঙ্গে এইচআইভি-র ওষুধ লোপিনাভির/ রিটোনাভির হাসপাতালে ভর্তি রোগীর উপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বন্ধ করার কথা জানাল হু।
কেন এই সিদ্ধান্ত? বিবৃতি দিয়ে হু জানিয়েছে, ‘‘অন্তর্বর্তিকালীন পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে এই তিনটি ওষুধের কোনওটিই হাসপাতালে ভর্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুর হার কমাতে পারেনি বা পারলেও খুবই সামান্য। তাই অবিলম্বে এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বন্ধ করা হচ্ছে।’’ ফলে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের উপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সংক্রান্ত যে সব গবেষণা চলছিল, সেগুলিও কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে বলেই মনে করছে চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ মহল।
তবে বিবৃতিতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, এই নির্দেশ শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এ বিষয়ে হু-এর বক্তব্য, ‘‘এই নির্দেশ শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ওই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে অথবা হাসপাতালে ভর্তি না থাকলে সে ক্ষেত্রে এই ওষুধগুলি ব্যবহার করা নিয়ে যে সব গবেষণা চলছিল, তাতে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।’’
তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা জিলিয়াডের তৈরি রেমডেসিভির করোনা আক্রান্ত রোগীদের উপর প্রয়োগ করা যাবে কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে হু-এর অন্দরে। অর্থাৎ এইচআইভি এবং ম্যালেরিয়ার ওষুধ প্রয়োগ বন্ধ হওয়ার পর তার পরিবর্ত হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের উপর অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ রেমডেসিভির প্রয়োগ করার অনুমোদন দেওয়া যায় কি না, সে বিষয়ে গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ শুরু করেছেন হু-এর বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা।
জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহের গোড়াতেই আমেরিকা জুড়ে ম্যালেরিয়ার দুই ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইন প্রয়োগ বন্ধ করেছিল মার্কিন ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। তবে সে ক্ষেত্রে মর্টালিটি রেট কমাতে কাজ না করার পাশাপাশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল। এফডিএ জানিয়েছিল, ম্যালেরিয়ার এই ওষুধ প্রয়োগ করলে হৃদযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গোড়া থেকেই এই দুই ওষুধের পক্ষে সওয়াল করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এ বার হু বন্ধ করে দেওয়ার পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কী অবস্থান নেন, তার দিকে নজর থাকবে। তবে হু-এর বিবৃতিতে অবশ্য কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা উল্লেখ করা হয়নি।