চরম অব্যবস্থাপনায় ও অপ্রস্তুতির মধ্য দিয়ে বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা শুরু হয়। পরীক্ষায় কিট সংকট, ল্যাবগুলিতে জনবল সংকট, ১৫-২০ দিন পরীক্ষার ফল প্রদান, লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে পরীক্ষা দিতে না পারা, রেজাল্ট পেতে বিড়ম্বনা, পরীক্ষার ফলে নানা ত্রুটি, একজনের ফলাফল আরেক জনগণের নামে ইস্যু করা, চিকিৎসক ও নার্সের জন্য পিপিই ও মাস্ক সংকট, পিসিআর মেশিন সংকট, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্স সংকট, রোগী ভর্তি করছে না।
তাছাড়াও অক্সিজেন, আইসিইউ, সাধারণ বেড এবং সর্বোপরি কোভিডের সাথে জড়িত ওষুধের আকাশচুম্বি দাম ও বাজার থেকে উধাও। এ ধরনের বহুবিধ সংকটের মধ্যে দিয়ে দেশে কোভিড চিকিৎসা চলছে। এর মধ্যে হঠাৎ করে সাধারণ রোগীদের কোভিড পরীক্ষায় ফি নির্ধারণ করলেন সরকার। বিষয়টি দেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। কারণ সংবিধানের ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদ এ রাষ্ট্রের নাগরিকদের চিকিৎসা ও মহামারীকালে যাবতীয় সুবিধা রাষ্ট্র নিশ্চিত করার কথা বলা আছে। তাই অবিলম্বে কোভিট পরীক্ষার ফি গ্রহনের নির্দেশনা বাতিল করে পরীক্ষা ও চিকিৎসায় যাবতীয় জঠিলতা দূর করে রাষ্ট্রের নাগরিকদের সংকটকালীন সময়ে জরুরি চিকিৎসা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।
আজ ৪ জুলাই (শনিবার) এক বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপের সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ ও সম্পাদক নিপা দাস উপরোক্ত দাবি জানান।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা মহামারীর কঠিন দুর্যোগে একদিকে মানুষ কর্মহীন, আয় রোজগার হারিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে দারুণভাবে হিমসিম খেতে হচ্ছে। সেখানে টেস্টের পরীক্ষার ফি সাধারণ রোগীদের জন্য ‘মরার উপর খারার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার একদিকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোভিড আক্রান্ত হলে তাদের জন্য ৮-১০ লাখ টাকা সরকারি অনুদান দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আর সংকটকালীন সময়ে রাষ্ট্র নাগরিকদের বিপদে পাশে না থেকে উল্টো পরীক্ষা ফি নির্ধারণ করে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ফি নির্ধারণ শুধু অমানবিক নয়, অগ্রহণযোগ্যও। রাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন পেশাজীবীদের জন্য পৃথক চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা হলেও সাধারণ রোগীদের ভাগ্যে সেই জরাজীর্ণ সরকারি হাসপাতাল ছাড়া কিছুই নাই। সেখানে আবার ভিআইপি, ভিভিআইপি নামে সব সুবিধাগুলো উপরতলার মানুষরা দখল করছে। চিকিৎসা সর্বজনীন না হলে এ অবস্থার পরিত্রাণ নেই।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, করোনার মহামারীকালে সরকার প্রধান হিসাবে প্রধানমন্ত্রী দিনে ২০ ঘণ্টা পরিশ্রম করছেন সাধারণ জনগনের দুর্ভোগ লাঘবে। আর অন্যদিকে সরকারের একশ্রেণীর কর্মকর্তারা নানা ফর্মূলা দিয়ে মানুষের ভোগান্তি বাড়াতে নানা ফন্দি ফিকির করছেন।
মহানগর