কোভিডের মতো ভাইরাস এইচএমপিভির সংক্রমণ এশিয়ায়

এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এইচএমপিভি ছড়িয়ে পড়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ফাইল ছবি: এনডিটিভি

সুপ্রভাত ডেস্ক »

এশিয়ার বিভিন্ন দেশে শ্বাসতন্ত্রের নতুন সংক্রমণ হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসের (এইচএমপিভি) ছড়িয়ে পড়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।  এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ।

চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটির উত্তরাঞ্চল এই ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বলে নিশ্চিত করেছে চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (চায়না সিডিসি)। এইচএমপিভি ভাইরাস সব বয়সী মানুষকে আক্রান্ত করার সক্ষমতা রাখলেও শিশুরা সবচেয়ে বেশি শিকারে পরিণত হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রতিবেদনে অবস্থার ভয়াবহতা ফুটে উঠলেও চীনা কর্তৃপক্ষ বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) কেউই এখনও জরুরি অবস্থা জারি করেনি।

ভাইরাসটির অস্তিত্বের কথা প্রায় দুদশক ধরে জানা থাকলেও এখনও এর কার্যকরী কোনও প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। ফলে, আপাতত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আর কোনও পথ খোলা নেই।

ভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে সতর্কতা ও জনস্বাস্থ্য বিধিমালা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ঠিকমতো হাত ধোওয়া ও মাস্ক পরার মতো বিধি মেনে চলার জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে জাপানের স্বাস্থ্য বিভাগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্রিয় রয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রাদুর্ভাবের পর দেশটিতে হাজার হাজার রোগীর খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের মতে, গত ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশটির প্রায় পাঁচ হাজার হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ৯৪ হাজারের বেশি রোগী ফ্লু সংক্রমণে সেবা নিয়েছেন। চলতি মৌসুমে জাপানে মোট সংক্রমণের সংখ্যা ৭ লাখ ১৮ হাজারে পৌঁছেছে।

চায়না সিডিসির তথ্য অনুযায়ী, এইচএমপিভি একটি আরএনএ ভাইরাস, যা নিউমোভিরিডায়ে পরিবারের মেটানিউমোভাইরাস গণের অন্তর্ভুক্ত। ২০০১ সালে ডাচ গবেষকরা এটি প্রথম শনাক্ত করেন। সেরোলজিক্যাল গবেষণায় দেখা গেছে, এটি গত ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি সাধারণ শ্বাসতন্ত্রের রোগজীবাণু হিসেবে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে রয়েছে।

শিশু, রোগ প্রতিরোধ কম ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি ও বয়স্ক জনগোষ্ঠী এই ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। আগে থেকেই কোনও অসুখ থাকলে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি জটিলতার ফলে মৃত্যুর দিকেও ঢলে পড়তে পারেন। এইচএমপিভি সাধারণত সর্দি, কাশি, জ্বর ও নাক বন্ধ হওয়ার মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। তবে কিছুক্ষেত্রে এই সংক্রমণে ব্রংকাইটিস ও নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে।

বর্তমানে এই ভাইরাসের কোনও টিকা বা কার্যকর ওষুধ নেই। মূলত প্রতিটি উপসর্গ পর্যালোচনা করে সেগুলো উপশমের ওপর চিকিৎসা করা হচ্ছে।