নিজস্ব প্রতিবেদক »
নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করে পুলিশের কাছ থেকে সাংবাদিকদের তথ্য প্রাপ্তির প্রতিশ্রুতি দিলেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম।
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সভায় তিনি বলেন, কেউ কোনো তথ্য প্রকাশ না করলে আমাকে সরাসরি ফোন করবেন। আমি আপনাদের তথ্য জানাব। আমার অফিস থাকবে সবার জন্য ওপেন। আমার দরজায় কোনো ব্যারিকেড থাকবে না।
যোগদানের চারদিন পর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন সিএমপি কমিশনার
সাইফুল ইসলাম বলেন, দায়িত্ব নিয়েই আমি আপনাদের কাছ থেকে শুনতে বসেছি আজকে। প্রতি তিন মাস পরপর আমি আপনাদের সঙ্গে বসতে চাই। ওই সময় আপনারা আমাকে প্রশ্ন করবেন। আমি সবগুলো প্রশ্নের এক এক করে উত্তর দেব।
থানার ওসিদের সতর্ক করে তিনি বলেন, কোনো থানার ওসি অপকর্ম করবে, সে দায় আমি নেব না। দুষ্টু গোয়ালের চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো।
আমি যে জেলায় কাজ করি, সেখানকার বাসিন্দা হয়ে যাই। চট্টগ্রামের সবকিছুই আমি চিনি। কোন দিন কোন থানায় যাব, সেটা আমি ছাড়া কেউ জানবে না। কোনো প্রটোকল, গার্ড ছাড়াই বিভিন্ন থানায় আমি পরিদর্শনে যাব।
নগরীতে কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার বলেন, কমিউনিটি ও বিট পুলিশের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের বিষয়ে আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি। বিতর্কিত কেউ এখানে থাকবে না।
এখন থেকে কোনো থানায় ওপেন ডে-হাউস অনুষ্ঠিত হবে না। প্রতিটি থানায় চারটি করে ওয়ার্ড আছে। এলাকার লোকজন থানায় এসে কেন কথা বলবে। পুলিশ তাদের কাছে যাবে। তারা তাদের কথা পুলিশের কাছে বলবে।
চট্টগ্রাম নগরীর কিশোর অপরাধ ও সাইবার অপরাধসহ বিভিন্ন বিষয়ে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আলাপ করেন সাংবাদিকরা।
শিশু নিখোঁজের কথা বলে গুজব সৃষ্টি করা হচ্ছে দাবি করে কমিশনার বলেন, অনেকে প্রেম করে বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে, আবার কেউ মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে, অনেকে পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে যাচ্ছে; তাদের অধিকাংশই আবার ঘরে চলে এসেছে। অভিভাবকদের বলব, যাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার আগে তার ছেলে কোথায়, কী কারণে গেছে- এসব বিষয়ে খবর নেন।
ফেইসবুকে সারা দেশের মত চট্টগ্রামেও শিশু নিখোঁজের খবরের বিষয়টিকে গুজব অ্যাখ্যা দেন সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) আব্দুল মান্নান মিয়া। তিনি বলেন, ফেইসবুকে কয়েকটি গ্রুপে এসব তথ্য ছড়িয়েছে। একটি তথ্যই সবার প্রচার করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। পরে তারা সেগুলোর বিষয়ে সংশোধনী দিয়েছে। তারা বলে গেছে, থানায় সাধারণ ডায়েরি ছাড়া কেউ এ ধরনের কিছু আর প্রচার করবে না।
সিএমপির নতুন কমিশনার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ১৯৯৫ সালে স্নাতকোত্তর করে ২০০১ সালে ২০তম বিসিএসের মাধ্যমে এএসপি হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। এর আগে তিনি এমআরটি পুলিশের ডিআইজি, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ও সিএমপির উপ-কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এ মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) আ স ম মাহাতাব উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) আবদুল মান্নান মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মাসুদ আহাম্মদ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্ত্তী।