সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক
শুক্রবার ছুটির দিনে দেশের ফুটবলাঙ্গনে হঠাৎ অস্থিরতা। একদিকে প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে তিনটি ম্যাচ চলছে। তবে সব ছাপিয়ে আলোচনায় ছিল সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য সিরাত জাহান স্বপ্নার হঠাৎ করেই ফুটবল থেকে অবসরের খবর। এর কিছুক্ষণ পরেই তাদের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের বাফুফে ছাড়ার খবর নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
প্রায় এক দশক নারী ফুটবল নিয়ে কাজ করছেন ছোটন। জাতীয় দলসহ, অনূর্ধ্ব সব দলকেই তিনি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে অনেকটাই ক্লান্তক ছোটন, ‘গত কয়েক বছর অসম্ভব পরিশ্রম করেছি। সেই ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েকটি দলকে পর্যায়ক্রমে অনুশীলন করিয়েছি। শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিক থেকে আমার বিশ্রাম দরকার। এখন বয়সও হয়েছে। পরিবারকেও সময় দেওয়া দরকার। তাই বাফুফের দায়িত্ব ছাড়তে চাই’।
আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লান্তির কথা বললেও ছোটনের মনে রয়েছে অসন্তোষ ও অপ্রাপ্তি। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সাফল্যের অন্যতম কারিগর গোলাম রব্বানী ছোটন। তার হাত ধরেই সাফ ট্রফিসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছে নারী দল। এত কিছু জিতলেও তার সঠিক মূল্যায়ন সেভাবে হয়নি। আর্থিক পারিশ্রমিকের পাশাপাশি আরো কয়েকটি বিষয়েও তার অসন্তুষ্টি রয়েছে। খবর জাগোনিউজ ও ঢাকা পোষ্টের
বাফুফে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেও এখনো এই বিষয়ে কর্মকর্তাদের কিছু বলেননি। বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণকে ছোটনের প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে তার কাছে এমন তথ্য নেই বলে জানান। ছোটন নারী দলের কোচিং করানোর আগে বাফুফের এএফসি’র বেতনভুক্ত কোচ ছিলেন। ফুটবলার হিসেবে অবসর নেওয়ার পর কোচিংই তার পেশা। এই আয় থেকেই তার পারিবারিক ব্যয় নির্বাহ হয়। বিশ্রামের পর আবার কোচিংয়ে ফিরতে চান, ‘আপাতত পরিকল্পনা মাস দুয়েক বিশ্রাম নেওয়ার। এরপর হয়তো কোনো ক্লাব বা কিছুতে কোচিংয়ে ফিরতে পারি’।
আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লান্তির কথা বললেও ছোটনের মনে রয়েছে অসন্তোষ ও অপ্রাপ্তি। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সাফল্যের অন্যতম কারিগর গোলাম রব্বানী ছোটন। তার হাত ধরেই সাফ ট্রফিসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছে নারী দল। এত কিছু জিতলেও তার সঠিক মূল্যায়ন সেভাবে হয়নি। আর্থিক পারিশ্রমিকের পাশাপাশি আরো কয়েকটি বিষয়েও তার অসন্তুষ্টি রয়েছে। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলে ছোটন হেড কোচ হলেও চাবিকাঠি মূলত ব্রিটিশ ট্যাকনিক্যাল ডাইরেক্টর পল স্মলির হাতে। ছোটন অনেক পরিশ্রম করলেও লাখ খানেক সম্মানী পান। অন্যদিকে পল স্মলি পেতেন ১৫ হাজার ডলার। সেই পল কাজের পরিবেশ নেই বলে ছেড়ে যাওয়ার কথা বলে আরো পাঁচ হাজার ডলার বেতন বাড়িয়ে নিলেও ছোটনদের দিকে তেমন নজর নেই বাফুফের। গত মৌসুমে বসুন্ধরা কিংসের নারী দলের প্রস্তাব ছিল ছোটনের। জাতীয় দলের চেয়ে অনেক বেশি অর্থের প্রস্তাব থাকলেও বাফুফে কর্তাদের আশ্বাসে তিনি সেখানে যোগ দেননি।
এদিকে হঠাৎ করে সব ধরনের ফুটবল থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না। গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে নিজের ফেসবুক আইডিতে তিনি এই ঘোষণা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে স্বপ্না ফুটবল ছাড়া কারণ বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে তিনি বলেছেন, আমি গত বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়ে ফুটবল ক্যাম্প থেকে রংপুরের বাড়িতে এসেছি। আমি আর ফিরব না সেটা আমার কোচরা বুঝতে পেরেছেন।
আপনি জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। আছেন ফর্মের তুঙ্গে। এ সময় ফুটবল ছাড়ার ঘোষণা কেন? জবাবে স্বপ্না বলেন, ’গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে আর কি হবে? আমি আসলে এর বেশি কিছু বলতে চাই না।
আমি যদি না খেলতাম, সবাই আমাকে দলে না দেখতো তাহলে জানতে চাইতেন আমি কোথায়? যে কারণে ফেসবুকের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি- আমি আর ফুটবল খেলছি না । অনেক তো খেললাম।’
স্বপ্না গত বছর নেপালে সাফজয়ী দলের সদস্য। টুর্নামেন্টে চারটি গোল করে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছেন। যদিও ইনজুরির কারণে ফাইনাল খেলতে পারেননি।