পটিয়া পৌরসভা নির্বাচন
বিকাশ চৌধুরী, পটিয়া :
আগামী পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে কে হচ্ছেন ‘নৌকার’ মাঝি। এ নিয়ে দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা বর্তমানে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
এর মধ্যে পটিয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরী, পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আইয়ুব বাবুল ও পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরুণ শিল্পপতি সরোয়ার হায়দার নৌকা প্রতীক পেতে বিভিন্নভাবে লবিং শুরু করেছেন। তবে নৌকা প্রতীক কে পাচ্ছেন তা নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সোমবার তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। যে কোন সময় পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হতে পারে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা কেন্দ্রের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। তবে কার ভাগ্যে ‘নৌকা’ রয়েছে তা কেউ জানেন না। চার প্রার্র্থীর মধ্যে এলাকায় রয়েছেন তরুণ শিল্পপতি সরোয়ার হায়দার।
জানা গেছে, প্রথম শ্রেণীর পটিয়া পৌরসভা ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে ৯টি ওয়ার্ড রয়েছে। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পৌরসভার মেয়াদ পূর্ণ হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন যে কোন মুহূর্তে পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারে। নৌকা প্রতীক নিয়ে এখানে নির্বাচন করতে চার প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। দলের হাইকমান্ড থেকে শুরু করে শীর্ষ নেতাদের কাছে নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছে দেন দরবার। নৌকার টিকেট নিজের পক্ষে ভাগিয়ে আনতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
এদিকে, সরকারী দলের চার প্রার্থী মাঠে কাজ করায় কে পাচ্ছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন, তা নিয়ে ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীরা গোলক ধাঁধায় রয়েছেন। বর্তমান মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, নাকি নতুন কোন প্রার্থী নৌকায় ভর করছেন, তা দেখার অপেক্ষায় উদগ্রীব হাজার হাজার ভোটার ও নেতাকর্মীরা।
বর্তমান মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ জানান, পটিয়া পৌরসভায় বিগত দশ বছরে অনেকগুলো দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু গত পাঁচ বছরে এমজিএসপি প্রকল্পের ৭টি প্যাকেজের ৩৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, এডিপি তহবিলে ২৫টি প্যাকেজের ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা এবং নিজস্ব তহবিলের আওতায় ৬১টি প্যাকেজে ৬ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকার উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য প্রকল্পসমূহ হচ্ছে পটিয়া নতুন থানা হাটে আধুনিক কিচেন মার্কেট নির্মাণ, প্রায় ৫ কি.মি. ফুটপাত, প্রায় ৭.৫০ কি.মি. ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। ড্রেন নির্মাণের ফলে পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা প্রায় নিরসন হয়েছে। সকল ওয়ার্ডের প্রধান সড়কসহ শাখা রাস্তাগুলো উন্নয়ন করা হয়ছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঈদগাহের উন্নয়ন করা হয়েছে, ফলে এলাকাবাসী ঈদের জামাতসহ বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারছে।
মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা যুবলীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)’র সাবেক বোর্ড সদস্য আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরী জানান, ছাত্র সংগঠন থেকে শুরু করে জেলা উপজেলায় ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছি। যুবলীগের অদ্যাবধি দায়িত্ব পালন করে আসছি। পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের অসংখ্য সামাজিক সাংস্কৃতিক ক্রীড়া সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে সমাজসেবামূলক কাজ করছি। আগামী পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচন করতে চান।
মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও শিশু সংগঠক আইয়ুব বাবুল বলেন, ১৯৮১-৮২ সালে বৃহত্তর সুচক্রদন্ডী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও পটিয়া থানা ছাত্রলীগের দুর্দিনে সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেছেন। অদ্যাবধি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সারথী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চান।
তরুণ শিল্পপতি ও পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার হায়দার বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত। আগামী পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে আগ্রহী। তাকে মনোনয়ন দিলে দলের প্রবীণ, নবীন নেতাকর্মীদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন।