সুপ্রভাত ডেস্ক »
উত্তর প্রদেশের হাথরসে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে অন্তত ১২১ জনের মৃত্যু। ভোলে বাবার সৎসঙ্গে যোগ দিতে গিয়েছিলেন ভক্তরা। প্রচন্ড গরমের মধ্য়ে চলছিল এই সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান। সেই সময় তাঁবুর ভেতরে একেবারে গলদঘর্ম অবস্থা। সৎসঙ্গ শেষ হওয়ার পরেই হুড়মুড় করে বেরোতে যান ভক্তরা। আর তখনই ঘটে পদপিষ্টের ঘটনা। সেখান থেকে বেঁচে ফিরতে পারলেন না অনেকেই।
কে এই ভোলে বাবা?
সংবাদমাধ্যম সূত্রের জানা যাচ্ছে, এই ধর্মগুরুর আসল নাম সুরজ পাল। যদিও ভক্তরা তাঁকে চেনেন বিশ্ব হরি ভোলে বাবা নামে। কাসগঞ্জের পাটিয়ালি বাহাদুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি। সেখানেই রয়েছে তাঁর মূল আশ্রম। যদিও শুরু থেকেই সন্ত ছিলেন না সুরজ। একটা সময়ে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে চাকরি করতেন তিনি। ১৮ বছর আগে চাকরি জীবন থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে নেন। এবং বাড়ি ছেড়ে নিজের গ্রামে এক ঝুপড়ি তৈরি করে সেখানেই থাকতে শুরু করেন। এর পর গ্রামে গ্রামে গিয়ে ঈশ্বরের নামে প্রচার শুরু করেন তিনি। ধর্ম প্রচারে গিয়ে প্রচার টাকা অনুদান পেতে থাকেন সুরজ। সেই টাকায় জায়গায় জায়গায় সৎসঙ্গের আয়োজন করতে থাকেন তিনি।
এভাবেই বাড়তে থাকে সুরজের ভক্তের সংখ্যা। গত ১৮ বছর ধরে নিজেকে একজন ধর্ম প্রচারক হিসেবে মানুষের সামনে তুলে ধরেন তিনি। লক্ষাধিক মানুষ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে গুরু হিসেবে অনুদান দিতে থাকেন। তাঁর আয়োজিত এক একটি সৎসঙ্গে যে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় জমত মঙ্গলবার মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় তা বেশ স্পষ্ট। জানা যায়, শুরু থেকেই ধোপদুরস্ত পোষাকে সাদা শার্ট-প্যান্ট পরে চেয়ারে বসেই ভক্তদের প্রবচন দিতেন ভোলে বাবা। শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর ভক্তের সংখ্যা।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) তেমনই সৎসঙ্গের আয়োজন করা হয়েছিল হাথরাসের মুঘলাগড়ি গ্রামে। ভোলে বাবার বাণী শুনতে সেখানে উপস্থিত হন হাজার হাজার মানুষ। যাঁদের বেশিরভাগই ছিলেন মহিলা ও শিশু। ছোট জায়গায় বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড় জমে। অনুষ্ঠান চলাকালীন হঠাৎ সেখানে ভিড়ের চাপে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। যার জেরেই পদপিষ্ট হয়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।