সুপ্রভাত ডেস্ক »
কেন পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের হাতে বিচারের দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন না— এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস বলেছেন, এটা আমি ডিসাইড করিনি, আমাদেরকে এই কাজ দেয়া হয়েছে। যারা আমাকে এই দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তারা মূলত তিনটি দায়িত্ব আমাদেরকে অর্পণ করেন। আমরা সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি।
বুধবার (১১ জুন) স্থানীয় সময় বিকেলে লন্ডনের চ্যাথাম হাউজে আয়োজিত সংলাপে সাংবাদিকের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমান সারাবিশ্বে চলমান অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে কীভাবে দেশের অর্থনীতি সামাল দিচ্ছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটা মূলত আমাদের জন্য অনেক কঠিন একটা কাজ। সারা বিশ্ব এই সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, আমরাও যাচ্ছি। আমাদের ইকোনমির বর্তমান অবস্থা নেগেটিভ। প্রতিনিয়ত বিগত সরকারের গ্রহণ করা ঋণ এবং মেগা প্রোজেক্টের জন্য অনেক বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে, এটা একটা বড় সমস্যা।
ড. ইউনুস আরও বলেন, আমাদের প্রকাশিত শ্বেতপত্রে বিগত সরকারের দুর্নীতির পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয় বিগত ১৭ বছরে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে। এভাবেই মূলত আমাদের রিসোর্সগুলো পাচার হয়ে গিয়েছে।
বিগত সরকারের ব্যাংকিং সেক্টরের দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, তারা ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদে নিজেদের লোক ঢুকিয়েছিল। এরপর তাদের পরিচিতজনদের লোন দেওয়া শুরু করে। এটা ছিল গিফটের মতো, কোন ধরনের চুক্তি ছিল না। এভাবে তারা ইচ্ছেমতো টাকা পাচার করেছিল। আর এখন আমাদেরকে সেই লোনগুলো পরিশোধ করতে হচ্ছে।
তবে আমাদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হল, বিদেশে যেসব মানুষ রয়েছে অর্থাৎ আমাদের ওভারসিজ বাংলাদেশিরা, তারা আমাদের বিপুল পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে। এটাই মূলত আমাদের অর্থনীতিকে রক্ষা করছে। আর এই রেমিটেন্স প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে, যেটা আমাদের ‘ব্যালেন্স অব পেমেন্টে’-এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এর আগে, সকালে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জোনাথন পাওয়েল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর আলোকপাত করা হয়। সেইসাথে, বাংলাদেশের চুরি যাওয়া সম্পদ উদ্ধার, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট, সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের মতো বিষয়গুলোও আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তার সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আবদুল মোমেন।