সংবাদদাতা, আনোয়ারা »
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে (কেইপিজেড) ‘ইয়ংওয়ান কেইপিজেড মেডিকেল কমপ্লেক্স’ নামে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে। শনিবার বিকেলে ‘ইয়নসেই ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় ইয়ংওন কেইপিজেড মেডিক্যাল কমপ্লেক্সের গ্রাউন্ডব্রেকিং অনুষ্ঠান’ শিরোনামের একটি অনুষ্ঠানের পর হাসপাতালটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এই ধরনের একটি মহৎ এবং গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আমি চট্টগ্রামের মেয়র হিসেবে কেইপিজেড কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানায়। আমি আশা করছি কেইপিজেডের ৫০০ শয্যার হাসপাতাল স্থানীয় স্বাস্থ্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যা দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করবে।
কেইপিজেড কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, কোরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) কর্পোরেশন বিডি লিমিটেড বর্তমানে ১৫টি বিনিয়োগকারী কোম্পানির অধীনে ৪৩টি কারখানায় ৩০ হাজার কর্মী রয়েছে। সম্পূর্ণরূপে চালু হলে ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এরই মাঝে কেইপিজেড একটি মেডিক্যাল কলেজ ও নার্সিং কলেজ দ্বারা সমর্থিত একটি আন্তর্জাতিক মানের মেডিক্যাল কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নসেই বিশ্বব্যিালয় এই অত্যাধুনিক চিকিৎসা প্রকল্প প্রতিষ্ঠার জন্য সব ধরণের প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং পরামর্শ প্রদান করবে। এই প্রকল্পটি হবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের একটি অত্যাধুনিক মেডিক্যাল কমপ্লেক্স যেখানে দেশ-বিেেশর শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা কাজ করবেন। এ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগ, নিউরো মেডিসিন, কার্ডিওলজি বিভাগ, গ্যাস্ট্রোলজি, সার্জারি, অর্থোপেটিক সার্জারি, গাইনি বিভাগ, শিশু, ইএনটিসহ ১৩ ধরনের চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে।
কেইপিজেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান জানান, আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে বাংলােেশর চিকিৎসা সেবায় ঘাটতি দূর করতে এবং চিকিৎসাক্ষেত্রে বিদেশ নির্ভরতা কমাতে কেইপিজেড নিজস্ব জমিতে ৫শ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে। হাসপাতালটি চালু হলে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় এটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
তিনি আরো জানান, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখে সব ধরনের রোগীর এখানে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে।
এ প্রকল্পটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে ইয়ংওয়ান কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এবং সিইও কিহাক সাং বলেন, প্রাথমিক লক্ষ্য হলো কোরিয়ান ইপিজেডের কর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা। এটি ধীরে ধীরে কেইপিজেডের আশেপাশের এলাকার জনগণকে সেবা দানের জন্য প্রসারিত করা হবে। সাথে সাথে হাসপাতালটি এই অঞ্চলের সামগ্রিক উচ্চ মানের স্বাস্থ্যসেবাতে অবদান রাখবে এবং দেশের মানুষের কাজে আসবে। ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল চালু করার পর পর্যায়ক্রমে একটি নার্সিং কলেজ ও একটি মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও তিনি যুক্ত করেন।
কোরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) কর্পোরেশন (বিডি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজাহানের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক, ইয়নসেই বিশ্বব্যিালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রেসিডেন্ট এবং সিইও ড. ডংসুপ ইউন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইসমাঈল খান। অন্যান্যদের মধ্যে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী, কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।