রুদ্র দাস »
শীতকাল আসতেই চারদিকে একটা নীরব শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বাতাসে ঠাণ্ডা ঝাঁকুনির সাথে সাদা সাদা কুয়াশা জড়িয়ে পড়ে। গাছপালা, মাঠ, আর নদী সব কিছু যেন এক অলৌকিক সাদাতে ঢেকে যায়। শীতের সকালগুলো ছিল বিশেষ; আকাশ ছিল পরিষ্কার আর সূর্য একেবারে ধীরে ধীরে উঠতে লাগলো।
একদিন, শীতের এক সকালে, গাঁয়ের এক ছোট্ট ছেলে, রনি, তার বন্ধু মেয়ে মিতা কে বলছিল, ‘দেখো মিতা, কুয়াশা যেন আমাদের রাজ্যকে জড়িয়ে নিয়েছে। মনে হয় একটা রাজা তার সিংহাসনে বসে আছেন।’
মিতা চোখ বড় করে বলল, ‘কুয়াশার রাজা? এটা কি তুমি বলতে চাচ্ছো, রনি?’
রনি একটু হাসল এবং বলল, ‘হ্যাঁ, আসলে শীতকালে কুয়াশা একটা জাদুকরী শক্তি নিয়ে আসে। এই কুয়াশাই যেন আমাদের রাজ্যের রাজা। সে পুরো পৃথিবীকে নিজের হাতে নিয়ে নেয়।’
কুয়াশার রাজা কিন্তু এমন একটা চরিত্র নয়, যে শুধু নিজের শাসন করে। সে কিন্তু শীতের আগমনের সাথে আসে, আর তার কাজ হল শান্তি এবং শীতলতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। তার উপস্থিতি সব কিছু ধীরে ধীরে রূপান্তরিত করে দেয়। ঘরবাড়ি, গাছপালা, সব কিছু সাদা সাদা হয়ে যায়, যেন এক নতুন জগতে পা রাখা।
রনি আর মিতা সেই দিন কুয়াশার রাজ্যের রাজকুমারীকে খুঁজতে বের হল। তারা বুঝল, কুয়াশার রাজা আসলে শীতকালেই তার শাসন শুরু করে, এবং তাকে অগ্রাহ্য করা যায় না। তবে, কুয়াশার রাজা কিন্তু খুব মায়াময়, তার শাসন আসলে সুখের এবং সব কিছু শান্তিপূর্ণ করে।
রনি এবং মিতা বুঝল, কুয়াশার রাজা আমাদের শেখায় যে, কখনো কখনো আমাদের জীবনে কিছু নতুন পরিবর্তন, কিছু ঠাণ্ডা, শান্তিপূর্ণ মুহূর্ত আসতে পারে, যা আমাদের আরো উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। শীতকাল যেমন নতুন সুযোগ এনে দেয়, তেমনি কুয়াশা আমাদের শেখায়, জীবনে শান্তি আর ধৈর্য রাখা কতটা জরুরি।
অবশেষে, রনি আর মিতা একসাথে সেই কুয়াশার রাজ্যকে উপভোগ করল, জানল যে প্রকৃতির নিয়ম মেনে চলাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা।