সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী প্রশাসন
ভোটাররা নিরাপদে ভোট
দিতে পারবেন : নির্বাচন কমিশন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
নগরে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আজ বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে প্রস্তুত প্রশাসন। বিজিবি, র্যাব, পুলিশের পাশাপাশি নিয়োজিত থাকবে আনসার সদস্য। রয়েছে স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং ২০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। নিরাপদে ভোটাররা যাতে ভোট দিতে পারে সেজন্য কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রয়েছে। এমনই ঘোষণা দিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।
গতকাল নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণের সময় জিএমনেশিয়ান প্রাঙ্গনে সংবাদকর্মীদের বলেন, ৭৩৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৪১৬টি ভোট কেন্দ্র অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এসব কেন্দ্রে অতিরিক্ত দুজন করে পুলিশ ও আনসার সদস্য থাকবেন। সাধারণত প্রতি কেন্দ্রে ১৬ জন করে পুলিশ ও আনসার থাকেন। এসব কেন্দ্রে ১৮ জন করে থাকবেন।
গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মারার ঘটনা ছিল। এবার ব্যালটের পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে ইভিএম। এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সব কেন্দ্রে ইভিএমের ব্যবহার করা হবে। এতে নগরবাসী দ্রুত ফলাফল পাবে জানিয়ে রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ইভিএম হওয়ায় আমরা দ্রুত ভোট গণনা করতে পারবো। এছাড়া কোনো কেন্দ্রে যদি ইভিএম মেশিন সমস্যা করে তাহলে একটি করে অতিরিক্ত মেশিন রাখা হয়েছে। ভোট প্রদানে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।
এদিকে গতকাল দুপুরে জিএমনেশিয়ান ভবন থেকে সব কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
নির্বাচন উপলক্ষে নগরে পুলিশের ৭ হাজার ৭৭২ জন, আনসারের প্রায় ৩ হাজার ৮০০ সদস্য, ২৫ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ৪১টি দল ছাড়াও স্ট্রাইকিং ফোর্স, রিজার্ভ ফোর্স ও মোবাইল টিম দায়িত্ব পালন করবে।
অফিস খোলা রেখে নির্বাচন প্রসঙ্গে হাসানুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশনে এভাবে নির্বাচন হয়েছে। অফিস খোলা রাখায় অফিস প্রধানরা তাদের লোকদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার সুযোগ করে দেবেন।
নির্বাচনের দিন নগরে যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। নির্বাচনী এলাকায় সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৩২(১) ধারা অনুযায়ী নির্বাচনের দিন (২৭ জানুয়ারি ২০২১) মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত বেবী টেক্সী/অটোরিক্সা/ইজিবাইক এবং স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন যন্ত্রচালিত যানবাহন, টেক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিক, কার, ট্রাক, লরি, টেম্পো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে মোটরসাইকেল চলাচলে সোমবার মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে নির্বাচনের দিন অফিস আদালত খোলা থাকবে বলে গণপরিবহন নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। একইসাথে রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী/তাদের নির্বাচনী এজেন্ট, দেশি/বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে এই চলাচল শিথিলযোগ্য। তাছাড়া নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি/বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনে বৈধ পরিদর্শক এবং জরুরি কাজে নিয়োজিত (যেমন অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ারসার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ ইত্যাদি) কার্যক্রম ব্যবহারের উপর উল্লেখিত যান চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
দুই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচন হবে না
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ১৮ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী হারুনুর রশিদ বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলায়মান সেলিম মারা যাওয়ায় এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
প্রথমবারের মতো ভোট ইভিএমে
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এবারই প্রথমবারের মতো সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হতে যাচ্ছে। এর আগে গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জামালখান ওয়ার্ডে ইভিএমে নির্বাচন হয়েছিল। পরে গত সংসদ নির্বাচনে কোতোয়ালী-বাকলিয়া আসনে ইভিএমে ভোট হয়েছিল। তবে এবার সিটি কর্পোরেশনের সবকটি কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোট হবে।
উল্লেখ্য, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে সাত জন এবং ৪১ ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭৩ জন প্রার্থী এবং সংরক্ষিত ১৪টি ওয়ার্ডে ৫৭ জন নারী প্রার্থী রয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আওতাধীন ৪১টি ওয়ার্ডের ৭৩৫টি কেন্দ্রের ৪ হাজার ৮৮৬ বুথে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন ভোটার রয়েছে। মোট ভোটারের মধ্যে ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন পুরুষ এবং ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন নারী ভোটার রয়েছেন। তবে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী থাকায় তা নিয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।