২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কার্যকর তামাক কর ও মূল্য বৃদ্ধির পদক্ষেপ চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে উল্লেখ করে এ সংক্রান্ত বাজেট পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ‘ইপসা’।
আজ ২২ জুন (সোমবার) প্রস্তাাবিত বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় এ দাবি জানায় সংস্থাটি।
ইপসার উপ পরিচালক নাছিম বানু স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে সুযোগ থাকার পর তামাকপণ্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার পরিবর্তে বরং তামাক কোম্পানিগুলোকেই লাভবান করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে সরকার অতিরিক্ত প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক তামাক ব্যবহারকারী ও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার ৪ কোটি ১০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নজিরবিহীন স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়বে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ তামাককে করোনা সংক্রমণ সহায়ক হিসেবে চিহ্নিত করে এর ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য জোর তাগিদ দিয়ে আসছে। এছাড়া দীর্ঘদিন থেকে ইপসাসহ দেশের তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো কার্যকর তামাক করনীতি বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন করে আসছে। অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে এসবের কোনো প্রতিফলন নেই। তামাক বিরোধী সংগঠনগুলোর প্রস্তাবকে উপেক্ষা করে এবারের বাজেট প্রস্তাবনায়ও সিগারেটের চারটি মূল্যস্তর বহাল রাখা হয়েছে। সিগারেটের ৪টি মূল্যস্তর বহাল রাখায় কমদামি সিগারেট বেছে নেয়ার সুযোগ অব্যাহত থাকবে এবং তরুণরা ধূমপান শুরু করতে উৎসাহিত হবে। ফলে সিগারেটের ব্যবহার না কমে বরং বৃদ্ধি পাবে।
সিগারেটের বাজারে চারটি মূল্য স্তরের মধ্যে প্রায় ৭২ শতাংশই নিম্নস্তরের সিগারেটের দখলে। এই স্তরে সম্পূরক শুল্ক ধার্য করা হয়েছে ৫৭ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৫৫ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেট কার্যকর হলে এই স্তরের সিগারেটের প্রকৃত মূল্য হ্রাস পাবে এবং তার ব্যবহার বাড়বে। আর প্রকৃতপক্ষে তামাক কোম্পানিগুলোই লাভবান হবে। এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যম স্তরে সিগারেটের দাম বাড়ানো হয়নি। উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের দাম বাড়ালেও তিনটি মূল্যস্তরে বর্তমান ৬৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বহাল রাখা হয়েছে। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির তুলনায় দাম বৃদ্ধি কম হওয়ায় সিগারেটের প্রকৃত মূল্য হ্রাস পাবে।
তামাক বিরোধীদের দাবি অনুযায়ী সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি এবং সম্পূরক শুল্কের একটি অংশ সুনির্দিষ্ট কর আকারে আরোপ না করায় সরকার অতিরিক্ত রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে উল্লেখ করে নাছিম বানু বলেন, এর ফলে তামাক কোম্পানিগুলোর আয় বৃদ্ধি পাবে। ফলে তারা মৃত্যুবিপণনে আরও উৎসাহিত হবে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আর্থিক ও স্বাস্থ্য ক্ষতি মোকাবিলায় এ বছর তামাক সংশ্লিষ্ট কর প্রস্তাবনায় ৩ শতাংশ সারচার্জ আরোপ করার দাবি জানিয়েছিল দেশের তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে যার প্রতিফলন না ঘটায় হতাশা প্রকাশ করেন নাছিম বানু। তিনি বলেন, ‘৩ শতাংশ সারচার্জ থেকে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আয় অর্জন করা সম্ভব হতো। অতিরিক্ত এই অর্থ সরকার তামাক ব্যবহারের ক্ষতি হ্রাস এবং করোনা মহামারী সংক্রান্ত স্বাস্থ্য ব্যয় এবং প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে ব্যয় করতে পারতো। এসবের প্রেক্ষিতে আমরা বাজেট সংশোধন করে মূল বাজেটে কার্যকর তামাক কর নীতি বাস্তবানের জোর দাবি জানাচ্ছি। বিজ্ঞপ্তি
মহানগর