সুপ্রভাত ডেস্ক »
২০ বছর পর আফগানিস্তানে ক্ষমতা কার্যত দখল করে নিল অপ্রতিরোধ্য তালিবান। হার মেনে বর্তমান সরকার দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হয়ে গেল কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। বিশ্ব-রাজনীতির টানটান এক চিত্রনাট্যের সামনে বসে হাঁ হয়ে রইল দুনিয়া।
প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি তাজিকিস্তান নাকি উজবেকিস্তান গেছেন তা নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। তালেবান যোদ্ধারা রাজধানী কাবুলের পূর্ণাঙ্গ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ তাদের দখলে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশ তাদের দূতাবাসগুলো থেকে কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, কাবুল বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে, টারমাকে পদদলিত হয়ে আহত হবার ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে তালেবান বলেছে, তারা সহিংসতা থেকে বিরত থাকবে, যারা চলে যেতে চায় তাদের নিরাপদে যেতে দেবে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, যোদ্ধারা কাবুলে প্রবেশের সময় কার্যত কোন বাধার মুখে পড়েনি।
আফগানিস্তানে চলমান যুদ্ধের সমাপ্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে তালেবান। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। রোববার (১৫ আগস্ট) তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের এক মুখপাত্র একথা জানান বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
মোহাম্মদ নাইম নামে তালেবানের ওই মুখপাত্র কাতারভিত্তিক আলজাজিরা টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে) তালেবান বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকতে চায় না এবং শাসনের ধরন ও রাষ্ট্রীয় গঠন কাঠামো খুব শিগগিরই পরিষ্কার করা হবে।
নাইম আরও বলেন, শরীয়াহ আইনের মধ্যে থেকেই নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। একইসঙ্গে বাকস্বাধীনতাও নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলছেন, বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবান শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায় এবং ইতোপূর্বে কয়েকটি দেশের সঙ্গে শুরু হওয়া যোগাযোগের চ্যানেলগুলোও আরও উন্নত করতেও আগ্রহী তারা। আলজাজিরা টেলিভিশনকে তালেবানের এই মুখপাত্র বলেন, ‘যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সঙ্গে বসতে আমরা সকল দেশ ও অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দাবী করছে কাবুল বিমানবন্দর তাদের নিয়ন্ত্রণে। যুক্তরাষ্ট্রের যেসব কর্তকর্তা সশস্ত্র তালেবান যোদ্ধাদের আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ পর্যবেক্ষণ করছেন, তাঁরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এবং শহরটির আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর আমেরিকান বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।