ফজলে এলাহী, রাঙামাটি »
উজান থেকে অব্যাহত পাহাড়ি ঢল এবং রাঙামাটিতে বৃষ্টিপাতের কারণে আবারো বৃদ্ধি পেয়েছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। এতে আবারো বিপদসীমায় পৌঁছেছে হ্রদের পানির স্তর। পানি কমাতে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট সাড়ে তিন ফুট করে খুলে দেয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৭৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে। এর আগে রোববার জলকপাট দুই ফুট খোলা থাকলেও হ্রদে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সোমবার সকাল থেকে সাড়ে তিন ফুট করে জলকপাট খুলে দেয়া হয়। বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর রয়েছে ১০৮.৭৪ এমএসএল(মিনস সি লেভেল)। হ্রদের সর্বোচ্চ পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আবদুজ্জাহের বলেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চার ফুট করে গেইট খুলে দেয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে পানি নিস্কাশন হচ্ছে ৭৯ হাজার কিউসেক। পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫টি ইউনিট চালু রেখে ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এতে পানি ছাড়া হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার কিউসেক পানি।
এদিকে হ্রদের পানির স্তর আবারো বেড়ে যাওয়ায় গত দুই সপ্তাহ ধরে দুর্ভোগে রয়েছে হ্রদের নি¤œাঞ্চল। প্রায় ১৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রাঙামাটি সদর, লংগদু, নানিয়ারচর, বরকল, জুরাছড়িসহ অন্যান্য উপজেলার নি¤œাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। হ্রদের পানি না কমায় জনদুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। তবে অনেকেই ত্রাণ পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, জেলায় পানিবন্দি মানুষের জন্য ৯২ মে.টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ করা হয়েছে। একই সাথে বাঁধের পানি ছাড়া অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি দুয়েকদিনের মধ্যে পানি কমে আসবে।
এর আগে ২৫ আগষ্ট সকালে ৬ ইঞ্চি করে খোলা হয় বাঁধের ১৬ টি জলকপাট,যা দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি নির্গত হচ্ছিলো। ছয়ঘন্টা খোলা রাখার পর সেদিন দুপুরে বন্ধ করা হয় জলকপাটগুলো। পরে রাতে আবার খুলে দেয়া হয়। সেই থেকে ৬ ইঞ্চির পর ক্রমাগত বাড়ানো হয় গেটের খুলে দেয়ার উচ্চতা,যা সোমবার বিকেলে ৪ ফুট উচ্চতায় এসে ঠেকেছে।