কাপাসগোলার স্কুলভবনটি দ্রুত মেরামত করা হোক

কী আশ্চর্য আমাদের নীতিমালা! মুখে শিক্ষা নিয়ে অনেক বড় বড় বুলি কপচালেও শিক্ষার বিষয়ে আমরা যে চরম উদাসীন তা প্রতি পদক্ষেপে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এত এত উন্নয়নের ডামাডোলে একটি বালিকা বিদ্যালয়ের কী হাল তা জানা গেল একটি পত্রিকার বরাতে। সেখানে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে ২০১৬ সালে করা র‌্যাপিড ভিজুয়্যাল স্ক্যানিং (আরভিএস) পরীক্ষায় নগরের কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভবনকে ‘লাল’ শ্রেণি বা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরপর কেটে গেছে ৯ বছর। দীর্ঘ এ সময়ে ভবনটি ভেঙে ফেলার কোনো উদ্যোগ নেয়নি চসিক। বরং ঝুঁকি নিয়েই ভবনটিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে সংস্থাটি। এমন পরিস্থিতিতে স্কুল ভবনটিকে নতুন করে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে চিঠি দিয়েছে নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক। এতে ভবনটি ‘যে কোনো সময় ধসে পড়ার’ও সম্ভাবনার কথা বলা হয়।

পুরাতন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস নেয়া হচ্ছে। পুরনো ভবনটি চার তলা। ঝুঁকির কারণে এ ভবনের নিচ তলায় কোনো ক্লাস নেয়া হয় না, সেটা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ফ্লোরগুলোর ২য় তলায় প্রাইমারি স্কুলের ক্লাস নেয়া হয়। তৃতীয় তলায় ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণি এবং চতুর্থ তলায় কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হয়। সব মিলিয়ে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থী নিয়মিত পাঠদান করে। স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ভবনের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষে ছাদের আস্তর খসে পড়েছে। দেয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল। ভেঙে পড়েছে সানশেড। ফলে দুর্ঘটনার শঙ্কায় তারা সবসময় আতংকে থাকেন। সম্প্রতি দেশে ঘন ঘন ভূমিকম্প হওয়ায় সেই আতংক আরো বেড়েছে।

জানা গেছে, পুরাতন ভবনটি আশির দশকে নির্মিত। সে হিসেবে ভবনটির বয়স চার দশক বা ৪০ বছর পূর্ণ হয়নি। এত কম সময়ে ভবনটি কেন ব্যবহারের অনুপযোগী বা ঝুঁকিপূর্ণ হয় উঠল সেটিও তদন্ত হওয়া জরুরি। আমাদের দেশে তাহলে ভবনের স্থায়ীকাল ধরা হয় কত বছর?
আসলে সেটা ঝুঁকিপূর্ণ কিনা এবং ঝুঁকিপূর্ণ হলে সেখানে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা চলছে কেন তা খতিয়ে দেখাও জরুরি। শিক্ষা নিয়ে আমরা কম মনোযোগী বলেই স্কুলটির এই হাল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।