চট্টগ্রামের উন্নয়নে ব্যাপক বরাদ্দ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি চট্টগ্রামবাসী কৃতজ্ঞ বলে মন্তব্য করেছেন সিটি কেেপারেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল রোববার চসিক ৬ষ্ঠ পরিষদের ২৪তম সাধারণ সভায় মেয়র এ মন্তব্য করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী টানেল থেকে ফ্লাইওভার নির্মাণসহ ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন। বিশেষ করে আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী চসিকের ইতিহাসের সর্বোচ্চ আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছেন। এ প্রকল্পসহ চলমান প্রকল্পগুলো শেষ হলে চট্টগ্রামের বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। বর্তমান উন্নয়ন কার্যক্রমে চট্টগ্রামবাসী সন্তুষ্ট। মেয়র হিসেবে চট্টগ্রামের জনগণের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে চাই।
সভায় প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলরবৃন্দসহ চসিকের কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট চট্টগ্রামের বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
এ সময় মেয়র বলেন, চট্টগ্রামে যানজটের জন্য ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনা, অনিয়ন্ত্রিত হকার ব্যবসা, অবৈধ পার্কিংসহ বেশ কিছু কারণ বের করেছি। যানজট নিরসনে হলিডে মার্কেট তথা হকারদের নির্দিষ্ট স্থানে সপ্তাহে দুদিন শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনে ব্যবসা করার অনুমতি দেয়া যেতে পারে। এছাড়া পে পার্কিং তথা নির্দিষ্ট স্থানে ফি এর বিনিময়ে পার্কিং চালু করা হবে। যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা বন্ধে যাত্রী ছাউনিগুলোতে দোকান বন্ধ এবং ফুটপাত দখল বন্ধ করা হবে। নগরীকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।
জলাবদ্ধতা হ্রাসে সিডিএর সাথে চসিকের কার্যক্রম সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, জলাবদ্ধতা হ্রাসে বারইপাড়া খাল থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খননসহ গ্রীস্মকালের মধ্যেই খাল-নালা ইত্যাদিতে জমা মাটি ও ময়লা পরিষ্কার করার হচ্ছে। তবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জলাবদ্ধতা হ্রাসে যে প্রকল্প পরিচালনা করছে, সেখানে রিটের্নিং ওয়ালসহ নালা-খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামের অনেক মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। আমি সিডিএ চেয়ারম্যানসহ সিডিএ’র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেছি যাতে এ প্রকল্পে বর্ষার পানি চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। কাউন্সিলরবৃন্দ আগামী ১০ দিনের মধ্যে খাল-নালার পরিস্থিতি কী তা রিপোর্ট আকারে জানাবেন আমাকে।
চট্টগ্রামের সৌন্দর্যবৃদ্ধিতে কাজ চলছে জানিয়ে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম শহরকে নান্দনিক নগরে পরিণত করতে সড়ক ও ফ্লাইওভার ডিজাইনের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যকে প্রাধান্য দিচ্ছি। চট্টগ্রাম শহরের যত্রতত্র বিলবোর্ড স্থাপন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পোস্টারের কারণে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পোস্টারের জন্য নির্দিষ্ট স্থান বরাদ্দের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। কোথাও অননুমোদিত বিলবোর্ড থাকলে তাও উচ্ছেদ করা হবে। শহরের আলোকায়ন বৃদ্ধির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কার্যক্রমকে বেগবান করতে এবারের একুশে বইমেলাকে আরো প্রাঞ্জল ও বৃহত্তর আকারে সাজানো হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য লড়ছেন তা বাস্তবায়নে চসিককে সম্মুখ সারিতে নিয়ে যেতে চাই । কাউন্সিলর এবং সেবা সংস্থাসমূহকে সাথে নিয়ে চসিকের সেবা ও সেবার মান বাড়িয়ে চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতা ও যানজটমুক্ত একটি স্বাস্থ্যকর পরিচ্ছন্ন মডেল শহরে পরিণত করতে সকলের সহযোগিতা চাই।
সভায় বিগত সাধারণ সভার কার্যবিবরণী, দরপত্র কমিটির কার্যবিবরণী এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির কার্যবিবরণী অনুমোদিত হয়। স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতিগণ তাদের নিজ নিজ কমিটির কার্যবিবরণী পেশ করেন।
সভায় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চসিক শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলরবৃন্দ, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেমসহ বিভাগীয় প্রধান ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি