সুপ্রভাত ডেস্ক »
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আজকে কিছু কিছু শক্তি যারা জনগণকে ভয় পায়, যাদের জনগণের ওপর আস্থা নেই, যারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ভয় পায়, নির্বাচনে যেতেও ভয় পায়। কাউকে দেশের পরিবর্তনের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে নগরীর পাঁচলাইশ থানা সংলগ্ন কিং অব চিটাগাং-এ পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ৮ নম্বর শুলকবহর ওয়ার্ড বিএনপির দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের পরিবর্তন আনবে ভোটের মাধ্যমে। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সরকার সংসদে গিয়ে দেশের সব পরিবর্তন আনবে।
আর কাউকে পরিবর্তনের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি এখানে। তাই অতিসত্বর নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। তারাই ঠিক করবে দেশ কোন পথে যাবে। আর কেউ নয়।
এখন আরেকদল শেখ হাসিনার মতো ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে জানিয়ে সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এখন আবার আরেক দল নামছে। এরা বলছে, আমাদের এতগুলো কাজ করতে হবে, সংস্কার করতে হবে। ভোটের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তারা তো বুঝতে পারছে না, তারা যে শেখ হাসিনার ভাষায় জনগণের কাছ থেকে ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ভোটকে বিলম্বিত করে, দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। সেটা কারো কাম্য নয়।
কিছু কিছু শক্তি জনগণকে ভয় পাচ্ছে মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, নির্বাচনে গেলে তাদের হয়তো যেই ফলাফল আসা দরকার সেটা আসবে না, তারা সেটা জানে। সেজন্য শেখ হাসিনা যেভাবে ১৫ বছর জনগণকে নির্বাচনে যেতে দেয়নি। বলে, আমি উন্নয়ন করতেছি, এটা-ওটা করতেছি, ভোটের দরকার কি? আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে গণতন্ত্রের যে সংগ্রাম করেছি। গণতন্ত্র ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা গণতন্ত্র চাই, মানবাধিকার চাই, আইনাধিকার চাই, আইনের শাসন চাই। দেশের মানুষের নির্বাচিত জনগণের মাধ্যমে একটি সংসদ চাই, সরকার চাই, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে। সকলে মিলে আমরা ইনশাআল্লাহ এটা বাস্তবায়ন করবো।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, উশৃঙ্খল হলে চলবে না, নতুন রাজনীতি হচ্ছে শৃংঙ্খলার রাজনীতি। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন এসেছে। সেই পরিবর্তনের মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। মানুষের নতুন চিন্তা ধারণ করতে হবে, তাহলে বিএনপির রাজনীতি এগিয়ে যেতে হবে। রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের নেতাদের আনতে হবে, কর্মীদের আনতে হবে, সমর্থকদের সকলের সহযোগিতায় আগামীদিনে নতুন রাজনীতিতে বিএনপির যে জনপ্রিয়তা আছে তা ধরে রাখতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ২৫ মার্চ যখন পাকিস্তানি বাহিনী বাঙ্গালির ওপরে ঝাপিয়ে পড়ল তখনও ৫ আগষ্টের মতো আওয়ামী লীগ পালিয়েছিল। তখন বাঙালি যখন যা পেয়েছে তাই নিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। তখন একটা কথা ভেসে আসল, আমি মেজর জিয়া, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করলাম। তখন মানুষ বুঝলো আমরা একা না, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী আমাদের সঙ্গে আছে। সে সময়ে জিয়াউর রহমান ক্যাম্পে বসে যুদ্ধের পরিকল্পনাও করতেন, যুদ্ধেও যেতেন। তখন থেকেই জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের মানুষের আস্থার নাম হয়ে ওঠে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার দীর্ঘ ১৬ বছর এই জাতির ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। তারা হত্যা করেছে, গুম খুন করেছে ক্ষমতায় টিকে থাকতে। জুলাইয়ে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই অবস্থান থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমরা আশা করব, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কারগুলো করে অতি দ্রুত নির্বাচন দেবে।
শুলকবহর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী শামসুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাসান উসমানের পরিচালনায় এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো, শাহ আলম, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন ,মঞ্জুর আলম চৌধুরী মঞ্জু, আহবায়ক কমিটির সদস্য ইসকান্দার মির্জা, মো. কামরুল ইসলাম, জাফর আহমেদ, মহানগর বিএনপি নেতা আশরাফ চৌধুরী, মঞ্জুর আলম মন্জু, হোসনাইন রিয়াদ ও পাঁচলাইশ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন প্রমুখ।