`পলিথিনও জলাবদ্ধতার অন্যতম বড় কারণ’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কর বৃদ্ধি করেছে বলে গণমাধ্যমের আলোচনা-সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নতুন করের হার বৃদ্ধি হবে না। কর আদায়ের আওতা ও পরিধি বাড়ানো হবে। তবে কোন ভবন দুইতলা থাকা অবস্থায় যে কর দিত এখন যদি তিনতলা, চারতলা বা বহুতল হয়ে যায় তা হলে বর্ধিত অংশের জন্য কর ধার্য কোনভাবে অযৌক্তিক হয় না।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৬ষ্ঠ পরিষদের পঞ্চম সাধারণ সভায় তিনি ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এ কথা বলেন।
মেয়র আরো বলেন, চসিককে নগরবাসীর কর দিয়ে চলতে হয় কিন্তু এই আয় দিয়ে সেবার পরিধি বাড়ানো কিছুতেই সম্ভব নয়। তাই নিজস্ব ভূ-সম্পত্তিতে আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কোন এলাকায় কি ধরনের আয়বর্ধক প্রকল্প করা যায় সেজন্য কাউন্সিলরদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হবে। চসিকের অব্যবহৃত ভূ-সম্পত্তিতে একাধিক বিনিয়োগ প্রস্তাবনা এসেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই প্রস্তাবনা যথাযথ কিনা তা বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে যাচাই-বাচাই করে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতি দেয়া হবে।
চট্টগ্রামে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎসহ নিত্যব্যবহার্য পণ্য রূপান্তরেও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে, তাদের প্রস্তাব বিবেচনাধীন। চসিকের দু’টি টেন্সিং গ্রাউন্ড আছে। এগুলো এখন পাহাড়সমান স্তূপে পরিণত হয়েছে। ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এখানকার স্তুূপ অপসারণে উদ্যোগী একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দিয়েছে। এগুলোও বিবেচনাধীন।
চলমান জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়নকালে নগরীতে সৃষ্ট জলজটে নগরবাসীর দুর্ভোগে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এর দায় সিডিএকে নিতে হবে। আমরা সিডিএকে অনুরোধ করেছিলাম, বর্ষার আগেই খালগুলোর যে অংশে বাঁধ দিয়ে পানিপ্রবাহ পথ অটকানো হয়েছে তা অপসারণ করা হোক। কিন্তু কথা দিয়েও সিডিএ কর্তৃপক্ষ কথা রাখেনি। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, সিডিএ খালের দু’পাশের যে অংশে রিটার্নিং ওয়াল তুলেছে সেখানে খালের মাঝেই মাটির স্তূপ করা হয়েছে এবং এই মাটি না সরিয়ে দিয়ে স্ক্যাভেটর দিয়ে সমান করায় খালের মধ্যে রাস্তা হয়ে গেছে। সিডিএ বলেছে তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ব্যবস্থাপনা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। কিন্তু প্রকল্পই যখন বাস্তবায়ন হয়নি তখন ব্যবস্থাপনার কথা আসে কেন? সম্পূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বুঝিয়ে না দেয়ার আগে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে পারি না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন।
পরিবহন সেক্টর, যোগাযোগ অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন না হলে মেগা প্রকল্পগুলোর সুফল পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, নগরীতে মেট্রোরেল ও মনোরেল করার প্রস্তাব এসেছে। মেট্রোরেলের ব্যাপারে একটা জরিপ আমাদের আছে, কিন্তু মনোরেলের ব্যাপারে কোন ধারণা নেই। মনোরেলের প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এটা সত্য যে, একটি আধুনিক শহরের জন্য দু’টি রেল সিস্টেম খুবই কার্যকর।
তিনি উল্লেখ করেন, পলিথিন সভ্যতার অভিশাপ, কর্ণফুলীতে পলিথিনের জমাট ও ভারী আবরণে ড্রেজিং করা যাচ্ছে না। শহরের নদী নালায় ও পলিথিনের স্তুূপ পড়ে আছে। এই পলিথিন জলাবদ্ধতার বড় কারণ। পলিথিনমুক্ত নগরী গড়তে আইন চাই।
চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদ মাহমুদের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছালে আহমদ চৌধুরী, মো. সাহেদ ইকবাল বাবু, অধ্যাপক মোহাম্মদ ইসমাইল, মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, নাজমুল হক ডিউক, ড. নিছার আহমদ মঞ্জু, মো. মোবারক আলী, আবদুল বারেক, হাসান মুরাদ বিপ্লব, আবদুস সালাম মাসুম, মো. শহিদুল আলম, মো. নুরুল আমিন, গাজী মো. সফিউল আজিম, শেখ মো. জাফরুল হায়দার চৌধুরী, মো. কাজী নুরুল আমিন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর নিলু নাগ, আঞ্জুমান আরা, শাহিন আক্তার রোজী, রুমকী সেন গুপ্ত, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী। বিজ্ঞপ্তি