চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত মানুষের জীবন রক্ষাকারী ঔষধ ও অক্সিজেনের কৃত্রিম সংকট ও বহুগুণ দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। আজ ১২ জুন (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর ও সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান সংকটের জন্য সরকারের ব্যর্থতা ও সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করেছেন।
নেতৃবন্দ বলেন, চট্টগ্রামে দিন দিন করোনা সংক্রমিত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। করোনা ভাইরাসে নতুন আক্রান্তের দিক দিয়ে বিশ্বের চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। বন্দরনগরী চট্টগ্রাম এখন করোনার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত। দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গেছে। করোনা শনাক্তের চেয়ে উপসর্গ নিয়ে মারা যাচ্ছে বেশি মানুষ। করোনা পরীক্ষার সার্টিফিকেট না থাকার কারণে করোনা হাসপাতালে তাদের ভর্তি নিচ্ছে না। আবার করোনা উপসর্গ থাকার কারণে অন্য হাসপাতালগুলোতেও তারা ভর্তি হতে পারছেন না। এতে বেশিরভাগ মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ঠাঁই নেই। অলিগলিতে করোনা রোগী। ঔষধ ও অক্সিজেনের জন্য সর্বত্র আর্তনাদ চলছে। আর মানুষের আর্তনাদকে পুঁজি করে অসাধু সিন্ডিকেটগুলো আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে। তারা ঔষধ ও অক্সিজেনের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ১০ গুণ পর্যন্ত। তারপরও সাধারণ মানুষ ঔষধ ও অক্সিজেন পাচ্ছে না। এতে করোনা আক্রান্ত মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। কিন্তু সরকার এই বিষয়ে কার্যকর কোন প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, চট্টগ্রামে প্রতিদিন করোনায় মৃত্যুর চেয়ে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা চার গুণ বেশি। নমুনা পরীক্ষা সহজ না হওয়ায় মৃতের এবং আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না। নমুনা পরীক্ষার ধীরগতির কারণে রিপোর্ট পেতে ৮/১০ দিন অপেক্ষা করতে হয়। এতে নমুনা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক সময় সঠিক ফলাফল পাওয়া যায় না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের ব্যর্থতার কারণে দিন দিন মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। চট্টগ্রামে ডাক্তার, পুলিশ ও অন্তসর্তা নারীসহ বোশরভাগ মানুষই করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে। সেজন্য চট্টগ্রামে করোনা হাসপাতালের পাশাপাশি করোনা উপসর্গযুক্ত হাসপাতাল খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই অন্তত ২টি বেসরকারী হাসপাতালকে করোনা উপসর্গযুক্ত হাসপাতাল ঘোষণা দিলে চট্টগ্রামের মানুষ সময়মতো চিকিৎসা সেবা পাবেন।
নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসার পরিসর আরো বৃদ্ধি করতে অবিলম্বে ২টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে করোনা উপসর্গযুক্ত হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করে অসাধু ঔষধ ও অক্সিজেন সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জনান। পাশাপাশি করোনার নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে করোনা সংক্রমণ রোধে চট্টগ্রামকে রেড জোনের আওতায় এনে লকডাউন ঘোষনা করার আহবান জানান।
Uncategorized