সুপ্রভাত ডেস্ক :
কোভিড থেকে সেরে উঠেও রেহাই নেই। জার্মান চিকিসৎকেরা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি সুস্থ হওয়া তিন-চতুর্থাশেরও বেশি রোগীর ক্ষেত্রে এমআরআইয়ের পরে হৃদ্যন্ত্রের পেশির সমস্যা ধরা পড়েছে।
একটি জার্নালে প্রকাশিত পর্যবেক্ষণে ফ্রাঙ্কফুর্টের ইউনিভার্সিটি হসপিটালের চিকিৎসক ভ্যালেন্টিনা পুন্টমান জানিয়েছেন, কোভিড থেকে সেরে ওঠা (৪৫ থেকে ৫৩ বছর বয়সি) ১০০ জনের মধ্যে ৭৮ জনের ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, হৃদ্যন্ত্রের পেশি কিংবা পেশির আবরণ ফুলে গিয়েছে। শতকরা ৩৬ জনের দেখা দিয়েছে শ্বাসকষ্ট ও ক্লান্তির সমস্যা, ৭১ জনের ক্ষেত্রে হৃদ্যন্ত্রের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোভিড হয়নি অথচ একই ধরনের সমস্যায় ভুগছেন— এমন মানুষদের এবং সদ্য কোভিড থেকে সেরে-ওঠা রোগীদের হৃদদ্যন্ত্রের কার্যকারিতার তুলনামূলক বিচারও করেছেন চিকিৎসকেরা। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, করোনার প্রভাবে এঁদের হৃদ্যন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ায় তা আর আগের মতো রক্ত পাম্প করতে পারছে না। তাই হার্ট ফেলিওরের আশঙ্কাও বেড়েছে।
ভ্যালেন্টিনার আশঙ্কা, হৃদ্যন্ত্রের এই ধরনের অনিয়মিত ক্রিয়া ভবিষ্যতে স্থায়ী সমস্যা হয়ে দেখা দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য ভাইরাসের আক্রমণের ক্ষেত্রে হৃদ্যন্ত্রে যে ধরনের প্রভাব দেখা গিয়েছে, তা থেকেই এমন সম্ভাবনার কথা উঠছে।’’
অন্য একটি জার্নালে গবেষকদের দাবি, সার্স-কোভ-২ ভাইরাসে যে ধরনের জিনগত পরিবর্তন সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, তা একই সঙ্গে চিন্তার ও স্বস্তির। চিন্তার কারণ এই যে, এই পরিবর্তন (ডি৬১৪জি)-এর ফলে ভাইরাসের বহিরঙ্গে প্রোটিনের কাঁটা (স্পাইক প্রোটিন)-র সংখ্যা বেড়েছে। ফলে তার আক্রমণের ক্ষমতাও বেড়েছে। এই কাঁটার সাহায্যেই কোষকে আক্রমণ করে করোনাভাইরাস। কিন্তু স্পাইক প্রোটিন মানবশরীরের কোষের মধ্যে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে তার রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেও সজাগ করে। তখন অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। শরীরে তৈরি অ্যান্টিবডি বা বাইরে থেকে প্রবেশ করানো প্রতিষেধক কিন্তু স্পাইক প্রোটিনকেই নিশানা করে। ফলে কাঁটার সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ার অর্থ— আখেরে ভাইরাসেরই আরও বেশি করে অ্যান্টিবডি র নিশানা হয়ে পড়া। তবে মনে রাখতে হবে, জার্মানিতে করোনাভাইরাসের ইতালীয় স্ট্রেনটিই বেশি সক্রিয়, যা ভারতে কার্যত দেখাই যায়নি।