ভ্যাকসিন জালিয়াতির কবলে পড়েছেন যাদবপুরের সংসদ সদস্য ও টলিউড নায়িকা মিমি চক্রবর্তী
কসবার এক কোভিড প্রতিষেধক শিবিরে যোগ দিতে গিয়ে প্রতারণার সম্মুখীন হয়েছেন অভিনেত্রী, সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। এ প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, ‘‘আমার কাছে দেবাঞ্জন দেব আসেন। নিজেকে আইএএস অফিসার এবং কলকাতা পুরসভার যুগ্ম-কমিশনার হিসেবে ভুয়ো পরিচয় দেন। প্রচার করেন, কলকাতা পুরসভা এই শিবিরের আয়োজক।’’
তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের উৎসাহ দিতেই মিমি কসবায় সেই প্রতিষেধক শিবিরে যোগ দিয়ে কোভিশিল্ড প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ নেন।
মিমি প্রতিষেধক নেওয়ার পর খেয়াল করেন, তাঁর মুঠোফোনে প্রতিষেধক প্রাপ্তি সংক্রান্ত কোনও তথ্য আসেনি। সেই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনকে মিমি বললেন, ‘‘প্রতিষেধক নেওয়ার পর আমি ওই শিবিরের উদ্যোক্তাদের কাছে শংসাপত্র চেয়েছিলাম। তখন তাঁরা জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার মুঠোফোনে প্রতিষেধক নেওয়ার শংসাপত্র এসে যাবে।’’ এর পরে মিমি তাঁর আপ্ত সহায়ককে শংসাপত্র নিয়ে আসার অনুরোধ করেন। কিন্তু বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও শংসাপত্র না পাওয়ায় শিবিরের আয়োজকদের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন মিমির সহকারী। আয়োজকেরা কোনও সদুত্তর দিতে না পারলে এর পরেই সাংসদ যোগাযোগ করেন কসবা থানায়।
সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন তৎপর হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রতিষেধক দেওয়ার শিবির। মিমি আরও জানান, এই শিবির এক দিনের ছিল না। গত ১০ দিন ধরে সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে এ ভাবেই প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছিল। এত দিন ধরে যত জন প্রতিষেধক নিয়েছেন, কেউই কোনও শংসাপত্র পাননি। ঘটনায় সাংসদ-তারকা যথেষ্ট হতাশ এবং ক্ষুব্ধ। খোদ কলকাতার বুকে এ ভাবে প্রতিষেধকের জালিয়াতি চক্রের রমরমা দেখে হতবাক মিমি। একই সঙ্গে তিনি সজাগ করেছেন সমস্ত শহরবাসীকে। পাশাপাশি প্রশ্নও তুলেছেন, আদৌ এই কোভিশিল্ড প্রতিষেধক কি যথার্থ? কোভিশিল্ডের নাম করে অন্য কোনও ওষুধ মানুষের শরীরে প্রবেশ করানো হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় জেগেছে তাঁর মনে।
মিমি-র করা অভিযোগপত্রের ছবি আনন্দবাজার অনলাইনের হাতে এসেছে। সেখান থেকে আরও জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত দেবাঞ্জন নিজেকে আইএএস অফিসার এবং কলকাতা পুরসভার যুগ্ম-কমিশনার হিসেবে ভুয়ো পরিচয় দেন। প্রচার করেন, কলকাতা পুরসভা এই শিবিরের আয়োজক। কসবা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে, গত ১০ দিন ধরে স্থানীয় ইউকো ব্যাঙ্ক বিল্ডিংয়ের দ্বিতলে ওই শিবির তৈরি করে চালাচ্ছিলেন তিনি। তদন্তের স্বার্থে প্রশাসন ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করেছে দেবাঞ্জনের ভুয়ো পরিচয়পত্র, কলকাতা পুরসভার নকল শিলমোহর, কাগজপত্র, অভিযুক্তের ব্যবহৃত টয়োটা গাড়ি। জানা গিয়েছে, নিজের প্রকৃত পরিচয় গোপন রাখতে গাড়িটিতে নীল বাতি, পতাকাও ব্যবহার করতেন দেবাঞ্জন। গাড়ির পিছনের কাচে লাগানো রাজ্য সরকারের বিশেষ স্টিকার। দেবাঞ্জন দেব গ্রেফতার হয়েছেন।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা