করোনার টিকা প্রদান নিয়ে প্রথম দুই একদিন কিছুটা অগোছালো অবস্থা থাকলেও এখন আর সেটা নেই, বরং গুজব অপপ্রচার ভীতি ছাপিয়ে এখন অনেকটা উৎসবের আমেজ টিকা দান কেন্দ্রে। টিকাদানের ক্ষেত্রে অতীতের অভিজ্ঞতা ও ব্যবস্থাপনা কাজে এসেছে। এখন সবাই যাতে বিনামূল্যে টিকা পেতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় টিকা সংগ্রহ, টিকাদান সর্বজনীন করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৩৭ জন। তবে পুরুষের তুলনায় নারী টিকা নিয়েছেন কম। এ ব্যাপারটিতে গুরুত্ব দিতে হবে। শহরে কিংবা গ্রামে নারীদের টিকা নেওয়ার আগ্রহও কম। অথচ এটি পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক নয়। পরিবারের সকল সদস্যকে পর্যায়ক্রমে টিকা নিতে হবে। এটিই স্বাস্থ্যবিধি, টিকা নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে সমালোচনা আছে। অনলাইনে নিবন্ধনের পাশাপাশি স্পট নিবন্ধন প্রক্রিয়াও চালু ছিল। এখন তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনলাইনে নিবন্ধন সকলে করতে পারেন না, আবার দোকানে গিয়ে করতে বাড়তি টাকা লাগে, নি¤œবিত্ত বা দরিদ্রদের পক্ষে নিবন্ধনে বাড়তি ব্যয় অনেককে নিরুৎসাহিত করবে। গ্রামে কিংবা শহরে এ ধরণের নিবন্ধন কম হচ্ছে। টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ যেভাবে বাড়ছে তাতে অনলাইন নিবন্ধনের পাশাপাশি স্পট নিবন্ধনও জরুরি। এতে বাইরে নিবন্ধন করানোর জন্য অর্থ ব্যয় থেকে তারা মুক্তি পাবেন। টিকাদান কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে স্পট নিবন্ধন করতে স্বাস্থ্য প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে। টিকাদান সহজ ও মানুষকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করা পরিহার করতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে বুথের সংখ্যা যেমন বাড়াতে হবে, তেমনি আরো নতুন টিকা দান কেন্দ্র খুলতে হবে। গ্রামাঞ্চলের মানুষকে বহু দূর থেকে উপজেলা কেন্দ্রে এসে টিকা নিতে হয়। বয়স্ক নরÑনারীদের এতে অসুবিধাও হয়। এ জন্য উন্নত সেবা সুবিধার কিছু ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ব্যবহার করা যেতে পারে। শহরেও নিবন্ধনের সময় কাছাকাছি টিকাদান কেন্দ্রের উল্লেখ থাকা বাঞ্ছনীয়।
সারা দেশে ২ হাজার ৫৯০টি বুথে টিকা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিকল্পনা ৭ হাজারের বেশি বুথ চালু রাখা। জনবলও আছে তবে টিকা প্রাপ্তির ওপর তা নির্ভর করবে। টিকা নেওয়ার হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে ১৭তম অবস্থানে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরেই বাংলাদেশ। স্বল্প সময়ে সকলকে টিকা দেওয়া সম্ভব হলে করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। সামাজিকÑঅর্থনৈতিক কর্মকা-ও নিরুদ্বিগ্নচিত্তে সম্পাদন সম্ভব হবে। অনেকের আইডি নেই, জন্মনিবন্ধন প্রক্রিয়ায় এখনো অনেকে শামিল হননি। সুতরাং গ্রাম কিংবা শহরে স্বেচ্ছাসেবক কর্মী দ্বারা ওয়ার্ডভিত্তিক নিবন্ধন কাজ সম্পন্ন করতে সচেষ্ট থাকতে হবে। এখন টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে ১ম ডোজ নেওয়ার ৮ সপ্তাহ পর এটি সরকারি সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ১ম ডোজ টিকা গ্রহণকারীর করণীয় পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত। নারীরাও যাতে বেশি সংখ্যায় টিকা নিতে আগ্রহী হন সে ব্যাপারটিতেও বিশেষ নজর দিতে হবে।
মতামত সম্পাদকীয়




















































